২৬৩ বছরে প্রথমবার, বদলাচ্ছে শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর রীতি

করোনার আবহে দুর্গাপুজোয় কোপ পড়েছিল আগেই। প্রথমত অর্থনৈতিক মন্দা। তার ওপরে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা। দুইয়ের চাপে কলকাতা বিখ্যাত পুজো কমিটিগুলো বদল আনছে বেশ কিছু। কাটছাঁট হচ্ছে বাজেটেও। তবে শুধুই বিখ্যাত সার্বজনীন পুজোগুলি নয়। পাশাপাশি কলকাতার ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ির পুজোতেও চিরাচরিত ছন্দে পরিবর্তন এল এই প্রথমবার।

দুর্গাপুজো আর উত্তর কলকাতা বলতেই যে নামটা ভেসে আসে, তা হল শোভাবাজার রাজবাড়ি। চওড়া ঠাকুরদালান, ঢাকের আওয়াজ, সামনের খোলা প্রাঙ্গণে যেন ফিরে আসে বহু বছর আগের সময়, ইতিহাস। যুগ যুগ ধরে একই নিয়ম পালিত হয়ে আসছে এই বনেদি বাড়িতে। পুজো শুরুর ২৬৩ বছর পরেও এতটুকু বদলায়নি পুজোর রেওয়াজ। তবে করোনার সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই এই প্রথমবারের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেশ কিছু নিয়ম আরোপিত করতে চলেছে শোভাবাজার রাজবাড়ি।

এবছর রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে পুজো দেখার অনুমতি মিলবে না কোনো দর্শকেরই। কেবলমাত্র বাড়ির সদস্যরাই উপস্থিত থাকবেন প্রাঙ্গণে। সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও থাকছে সীমাবদ্ধতা। রাজবাড়িতে উপস্থিতির জন্য সকলের জন্যই বাধ্যবাধক করা হয়েছে বিশেষ আই-ডি কার্ড। সাংবাদিকদের সম্প্রচারের জন্য আগে থেকে সংগ্রহ করতে হবে এই আই-কার্ড। তবে যে কোনো সংবাদ মাধ্যমের দু’জনের বেশি সাংবাদিককে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে রাজবাড়ির তরফে।

তবে শুধু দর্শকই পাল্টাচ্ছে পুজোর কিছু আচারও। পুজোতে দেবীকে অর্পণ করা হয় ২৫ ধরনের মিষ্টি। যে মিষ্টি তৈরি হয় রাজবাড়ির হেঁসেলেই। এই মিষ্টি তৈরি করতে আসেন বাঁধা-ধরা ময়রারা। এই বছর মাত্র একজনই ঠাকুর দায়িত্ব সামলাবেন পুরো বিষয়ের। ফলে ছোটো করা হয়েছে সেই তালিকাও। পাশাপাশি থাকছে না ঢাকিদের উপস্থিতিও। রেকর্ডেই এবারে আওয়াজ শোনা যাবে ঢাক এবং সানাইয়ের। প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী নৌকায় করে মাঝ গঙ্গায় গিয়ে দেবীর ভাসানের প্রথা প্রচলিত রয়েছে শোভাবাজার রাজবাড়িরেই শতাব্দীপ্রাচীন পুজোয়। তবে করোনার জন্য এবার ট্রলিতে করেই নিরঞ্জনে যাবেন দেবী। তবে এসব কেবলমাত্র এই বছরের জন্যই। তা জানিয়েছেন স্বয়ং বাড়ির কর্তা। এই মহামারীর আবহ কাটলে রাজবাড়ির পুজোর দ্বার আবার খুলে যাবে সক্কলের জন্যই...

আরও পড়ুন
ভাদোদরার রাজবাড়ির বাগানে বহুতল তৈরির সিদ্ধান্ত রেলের, প্রতিবাদে সরব রাজপরিবার

Powered by Froala Editor