পৃথিবী থেকেই প্রতিদিনই মুছে যাচ্ছে বেশ কিছু করে জনগোষ্ঠী। হারিয়ে যাচ্ছে ভাষা। তেমনই বাংলায় লুপ্তপ্রায় জনজাতির তালিকায় বহুবছর আগেই নাম লিখিয়েছিল বিরহড়। তবে হারিয়ে যেতে যেতেও যেন একটা ঘুরে দাঁড়ানো। উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেন পুরুলিয়ার বাসিন্দা জানকী শিকারী। তৈরি হল এক ইতিহাস। প্রথমবারের জন্য বিরহড় জনগোষ্ঠীর কোনো মেয়ে গণ্ডি পেরল উচ্চমাধ্যমিকের।
পুরুলিয়ায় বাঘমুণ্ডিতে ভূপতি পল্লির রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয় থেকেই পরীক্ষা দিয়েছিল জানকী। কলাবিভাগের ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকে পেয়েছে ২১৭। তার ফলাফলে উচ্ছ্বসিত পরিবার, গ্রামবাসীরাও। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিধায়ক নেপাল মাহাতোও। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, অষ্টাদশী জানকীর পরবর্তী সমস্ত পড়াশোনার খরচের ভারবহন করবেন তিনি।
নিজের শিক্ষিত হওয়াই একমাত্র লক্ষ্য নয় জানকীর। শিক্ষার আলো যাতে পিছিয়ে পড়া সমস্ত মানুষদের কাছেই পৌঁছায়— চায় এই তরুণী। স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার। নিজে লড়াইয়ের সাক্ষী থেকে, পরবর্তীকালে অন্যদের পড়াশোনায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায় জানকী। জানকী জানায়, হোস্টেল থেকে ফিরেও জীবিকা নির্বাহের জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে হত তাকে। তবে শিক্ষার আলো এলে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারবে তার মত আরো অনেক জানকীই। হারিয়ে যাবে না তাদের সংস্কৃতিও। সেই লড়াইটার জন্যই একশো শতাংশ প্রস্তুত পুরুলিয়ার জানকী শিকারী...
Powered by Froala Editor