লকডাউনে থমকে আছে জীবনযাত্রা। তাই স্বস্তিতেই রয়েছে বন্যপ্রাণীরা। কোথাও কোথাও জঙ্গল থেকে বেরিয়েও আসছে বিলুপ্তপ্রায় নানান প্রাণী। জানান দিচ্ছে উপস্থিতি। তবে তাদের বাসস্থান কতটা নিরাপদ রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ এর মধ্যেই চলছে চোরাশিকার। সম্প্রতি অসমের কাজিরাঙায় চোরাশিকারিদের নিশানায় প্রাণ গেল একটি একশৃঙ্গ গণ্ডারের। গত ১৩ মাসে এই প্রথম কোনো বন্যপশুর প্রাণ গেল কাজিরাঙায়।
শনিবার কাজিরাঙার আগোরাতলি রেঞ্জের অন্তর্গত ডোরামারি বিলের কাছে বনদপ্তর কর্মীরা ওই গণ্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার করে। আধিকারিকদের অনুমান, দু’তিন দিন আগে হত্যা করা হয়েছে গণ্ডারটিকে। গণ্ডারটির শৃঙ্গ কেটে নিয়ে গেছে চোরাশিকারিরা। সঙ্গে পাওয়া গেছে ৮টি গুলির শেল। সেখান থেকেই জানা যায়, বন্যপ্রাণীটির শিকারে ব্যবহৃত হয়েছিল একে-৪৭ অটোমেটিক রাইফেল।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বন দফতরের আধিকারিকরা। এই শিকারে আঞ্চলিক কোনো সশস্ত্র দল যুক্ত রয়েছে। এমনটাই ধারণা তাঁদের। বিগত ছ’মাস ধরেই কাজিরাঙায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাশিকারিরা। একাধিক চেষ্টা হয়েছে বন্যপশু শিকারের। শেষ ছ’মাসে প্রায় ৮০ জন চোরাশিকারী ধরা পরেছে বন দফতরের প্রহরীর কাছে।
লকডাউনে পর্যটন বন্ধ থাকার দরুন বাড়তি সুবিধা পেয়েছে ওই দল। সঙ্গে কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য গভীর অরণ্যে টহল দেওয়াও বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল বন দফতরের কর্মীদের কাছে। তারই সুযোগ নিয়েছে চোরাশিকারিরা। তবে ওই স্থানে গণ্ডার ছাড়াও বসবাস বাঘ এবং হাতির। সুতরাং তাদের বিপদের সম্ভাবনা নেহাত কম না। এ-ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক রয়েছেন আধিকারিকেরা।
এদিকে অসমে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু’র সংক্রমণ ঠেকাতে বাধ্য হয়েই আক্রান্ত গৃহপালিত শূকরদের নিধন করছেন সরকারি আধিকারিকেরা। এতে ভয় পেয়ে, জাতীয় উদ্যানের দিকেই পালাচ্ছে শূকরগুলি। কাজিরাঙায় এই শূকরগুলি প্রবেশ করলে সংক্রমণ হতে পারে বন্য শূকরদের মধ্যেও। চোরাশিকারের পাশাপাশি এই ঘটনাও বেশ চিন্তিত করে তুলেছে বন দফতরকে।