সারা বিশ্বে সাংবাদিকতার জগতে কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি অবশ্যই ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’। ১৪৪ বছরের ইতিহাসের নির্ভুল, তথ্য সমৃদ্ধ এবং সাহসী সংবাদ পরিবেশনের একটি সমান্তরাল ধারা তৈরি করেছে এই সংস্থা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক। আর এবার আরও এক ইতিহাস সৃষ্টির পথে ওয়হাশিংটন পোস্ট। এই প্রথম সংস্থার শীর্ষপদে দায়িত্ব নিতে চলেছেন কোনো মহিলা। আর কিছুদিনের মধ্যেই সংস্থার এগজিকিউটিভ এডিটর হিসাবে কাজ শুরু করবেন আমেরিকার প্রবাদপ্রতিম সাংবাদিক স্যালি বাজবি। সম্প্রতি সংস্থার নিজস্ব বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন প্রকাশক ফ্রেড রেয়ান।
১৯৮৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ কানসাস থেকে ডিগ্রি অর্জনের পর সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ স্যালি বাজবির। প্রথম দিন থেকেই যুক্ত রয়েছেন আমেরিকার আরেক বিখ্যাত সংবাদ সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েট প্রেস’-এর সঙ্গে। বিগত ৫ বছর তিনি অ্যাসোসিয়েট প্রেস-এর চিফ এডিটর তথা ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়ত্ব পালন করেছেন। ৩৩ বছরের সেই সম্পর্ক ভেঙে এবার বেরিয়ে আসছেন বাজবি। ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটন পোস্টের কর্মচারীরা সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাঁদের নবনিযুক্ত এগজিকিউটিভ এডিটরকে। বাজবির হাত ধরে ওয়াশিংটন পোস্ট আন্তর্জাতিক স্তরে সাহসী সংবাদ পরিবেশনায় দৃষ্টান্ত তৈরি করবে বলেই মনে করছেন প্রকাশক রেয়ান।
গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন পোস্টের এগজিকিউটিভ এডিটর পোস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন মার্টিন ব্যারন। এরপর ১০ সপ্তাহ ধরে নতুন মুখ খুঁজছিলেন রেয়ান। অসংখ্য ইন্টারভিউর শেষে বেছে নেওয়া হল বাজবিকে। একদিকে ওয়াশিংটন শহরের সংবাদ সম্পাদনার বিষয়ে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে তিনি অ্যাসোসিয়েট প্রেসের ওয়াশিংটন শাখার সাংবাদিকতা করেছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে তাঁর সাহসী ভূমিকার কথা সর্বজন বিদিত। বিশেষ করে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে তাঁর একের পর এক তদন্তমূলক সংবাদ রীতিমতো চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল।
অন্যদিকে ১৮৭৭ সাল থেকে ওয়াশিংটন পোস্ট বরাবর সাংবাদিকের স্বাধীনতার বিষয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। স্যালি বাজবির মতো সাহসী সাংবাদিকের হাত ধরে সেই যাত্রা আরও দ্রুতগামী হবে বলেই আশাবাদী সকলে। ইতিমধ্যে লন্ডন, সিওল সহ আমেরিকার বাইরের নানা শহরে শাখা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এই সময় সংস্থার শীর্ষপদে এমন কাউকে প্রয়োজন, যিনি আন্তর্জাতিক স্তরের সংবাদ সম্পাদনার বিষয়ে অভিজ্ঞ। সমস্ত দিক বিবেচনা করেই বেছে নেওয়া হয়েছে বাজবিকে। আর এর আগে সংস্থার ম্যানেজিং এডিটর পদে বেশ কয়েকজন মহিলা সাংবাদিক নিযুক্ত হলেও এগজিকিউটিভ এডিটরের পদে বরাবরই পুরুষের আধিপত্য ছিল। ১৪৪ বছরের সেই আগল ভেঙে এবার এগিয়ে এলেন স্যালি বাজবি।
আরও পড়ুন
বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের জের, ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন ‘টিন ভগ’ সম্পাদক
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নতুন সম্পাদক ‘বর্ণবিদ্বেষী’, প্রতিবাদ ‘টিন ভগ’-এর ২০ কর্মীর