অজস্র চেষ্টাতেও ঠেকানো গেল না ভাইরাস, করোনায় প্রথম মৃত্যু ভিয়েতনামে

কোভিড-১৯ এর জেরে সারা বিশ্বের অবস্থা শোচনীয়। মৃত্যুর পরিসংখ্যান নতুন নতুন গণ্ডি পার করছে প্রতিদিনই। এতদিন যে ভিয়েতনাম ছিল এই তালিকার বাইরে, এবার সেখানেও থাবা বসাল মৃত্যু। জানা গিয়েছে, শুক্রবার ৭০ বছরের হুই আন প্রদেশের এক বৃদ্ধ প্রথম মারা গেলেন কোভিড সংক্রমণে।

কয়েকদিন আগেই ভিয়েতনাম সরকার দা নাং এলাকায় সংক্রমণের জেরে টুরিস্টদের জন্য বন্ধ করেছিল সেটি। ১৪ দিনের জন্যে শহরে ঢুকতে পারবে না কেউ, জারি করেছিল এমন নিষেধাজ্ঞাও। বিশ্বের বড়ো বড়ো দেশগুলি যখন কোভিড সংক্রমণ কী করে ঠেকাবে বুঝে উঠতে পারছিল না, তখন ভিয়েতনামে রেকর্ড হয়েছিল মাত্র ৪০০টি কেস। যার মধ্যে ছিল না কোনো মৃত্যুর তথ্য।

ভিয়েতনাম প্যানডেমিক শুরু হওয়ার সময় থেকেই পর্যটকদের জন্যে বন্ধ করে দিয়েছিল বর্ডার এরিয়া। নতুন করে যারা প্রবেশ করছিলেন দেশে, তাদের জন্যে সরকার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন এবং টেস্টের ব্যবস্থা করেছিল। যার ফলে মধ্য এপ্রিল থেকে নতুন কোন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি ভিয়েতনামে। বিশ্বের বাকিদের কাছে সময়োচিত পদক্ষেপের জন্য প্রশংসিতও হচ্ছিল দেশটি।

কিন্তু ক’দিন আগে, প্রায় তিন মাস পরে ৩০টি নতুন পজিটিভ কেসের সন্ধান পাওয়া যায় সমুদ্রশহর দা নাং-এ। সঙ্গে সঙ্গে এই অংশে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করে ভিয়েতনাম সরকার। পর্যটক প্রবেশে জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। সেইসময় ১০০০০ এর কাছাকাছি মানুষ উপস্থিত ছিলেন শহরটিতে। অনেকে বিশ্বাসও করে ফেলেছিলেন, করোনা ভাইরাস বিদায় নিয়েছে দেশ থেকে। 

এমন পরিস্থিতিতেই বৃদ্ধের মৃত্যু সেই বিশ্বাসে ধাক্কা দিল বড়োসড়ো। দা নাং-এ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছিলেন সমস্ত দেশবাসীকে। তবে, এই মৃত্যুর খবরটি নিয়ে প্রথমে তৈরি হয়েছিল এক ধোঁয়াশা। দেশের বিভিন্ন অংশের স্থানীয় মিডিয়াতে সম্প্রচারিত হবার পরেই পুনরায় ডিলিট হয়ে যায় এটি। পরে ভিয়েতনামের "ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি ফর কোভিড-১৯" থেকে ঘোষিত হবার পর পুনরায় মিডিয়াতে এটি সম্প্রচার করা হয়। 

মনে করা হচ্ছে, জনগণের কথা ভেবে ভিয়েতনাম সরকার খবরটি ঘোষণা করতে সামান্য দ্বিধাগ্রস্থ ছিল প্রথমে। পরে ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দেশের জন্য ‘অ্যাগ্রেসিভ প্রিভেনশন স্ট্র্যটেজি’-ও ঘোষণা করে সরকার। দা নাং-সহ আরও বেশ ক’টি অঞ্চলে ফের জারি হয় লকডাউন। বিভিন্ন বিধিনিষেধও নতুন করে আবার আরোপ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। 

আরও পড়ুন
করোনার প্রভাবে বদলাচ্ছে হস্তাক্ষর, প্রায় সকলের লেখাই যেন আঁকাবাঁকা; জানাচ্ছে সমীক্ষা

Powered by Froala Editor