একের পর এক ঘটনায় গত কয়েক বছর ধরেই উত্তাল ভারত। আর এসবের মধ্যেই আড়ালে চলে গেছে কৃষকদের আত্মহত্যার খবর। সম্প্রতি একটি রিপোর্ট আবার ফিরিয়ে আনল সেই আলোচনা। এমনিতেই অর্থনৈতিক মন্দা, খারাপ আবহাওয়ায় ক্রমশ ক্ষতি হচ্ছে চাষবাসের। আর, গত চার বছরে এই প্রথম মহারাষ্ট্রে কোনো একটি নির্দিষ্ট মাসে ৩০০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।
সরকারি নথি থেকে জানা গেছে অক্টোবর মাসে মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যা করেছিলেন ১৮৬ জন কৃষক। আর নভেম্বরে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩০০। বর্ষাকালে রাজ্যটিতে ব্যাপক খরার কারণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাষের। এমনকি, খরার পরে অক্টোবরে ব্যাপক বৃষ্টিতে ৯৩ লক্ষ হেক্টর শস্যের জমি নষ্ট হয়েছে। আর সে-জন্যই দুর্দশার হাত থেকে মুক্তি পেতে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন কৃষকরা।
সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের ঋণ মকুব করার কথা জানালেও পাল্টায়নি পরিস্থিতি। মূল্যবৃদ্ধির ফলে চাষের যন্ত্রপাতির দাম বিপুল বেড়েছে, কঠিন হয়েছে চাষীদের জীবন। ধার করে সেসব যন্ত্রপাতি কেনার পর যখন আবহাওয়াজনিত কারণে শস্য নষ্ট হয়ে যায়, তখন আর কিছুই করার থাকে না। ঋণের দায় মাথায় নিতে না পেরে আত্মহত্যা করেন তাঁরা।
কৃষক আত্মহত্যায় ভারতের স্থান খুব দ্রুত ওপর দিকে উঠে আসছে, এমন আশঙ্কা বেশ কিছুদিন আগেই করেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ডস অফ ব্যুরোর তথ্যের দিকে তাকালে আরও ভয়ানক লাগবে এই সংখ্যা। ২০১৬ সালে প্রতিদিন গড়ে ৩১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে এমনই।
ভারতবর্ষের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে কৃষকদের জীবন। বাজারে সবজির দাম বাড়ছে, কিন্তু কৃষকদের লাভ হচ্ছে না কিছুতেই। আবহাওয়া খারাপ হলে ক্ষয়ক্ষতির হার সামলাতে পারছেন না তারা। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? যাদের জন্যে মানুষের দুবেলা খাবার জোটে, তাদের জন্য কি এতটুকুও ভাববে না কেউ, প্রশ্ন উঠছে বারবার।