Powered by Froala Editor
হুইলচেয়ারে বসেই সাফল্য ছিনিয়ে নিয়েছেন যে সব বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
১/৭
কেউ প্রখ্যাত ক্রীড়াবিদ, কেউ আবার টিভি তারকা কিংবা বিশ্বের প্রথম সারির বিজ্ঞানী। অথচ প্রত্যেকেই সাক্ষী থেকেছেন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা কিংবা দুরারোগ্য রোগের। প্রত্যেকেই হারিয়েছেন চলচ্ছক্তি। তবে পিছিয়ে যাননি নিজের কাজের ক্ষেত্র থেকে। হুইলচেয়ার বসেই বিশ্বজয় করেছেন তাঁরা। হয়ে উঠেছেন সারা বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা। দেখা নেওয়া যাক এমনই কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের…
২/৭
ডেভিড ওয়েয়ার— বিশ্বের অন্যতম সেরা প্যারালিম্পিক অ্যাথলিট হিসাবেই ধরে নেওয়া হয় তাঁকে। মোট আটবার লন্ডন ম্যারাথন জিতেছেন ডেভিড। তাছাড়াও ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্যারালিম্পিকে হুইলচেয়ার রেসিং বিভাগে মোট ৬টি স্বর্ণপদক পেয়েছেন তিনি। তবে এখানেই শেষ নয়। প্রতিবন্ধী খেলায় অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্যও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে তাঁর। জেনি আর্চারের সঙ্গে জোট বেঁধে আর্চার অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। ২০১৩ সালে ব্রিটিশ সরকার ‘কমান্ডার অফ দি অর্ডার’ সম্মান প্রদান করে ডেভিডকে।
৩/৭
সোফি মরগান— বয়স তখন মাত্র ১৮ বছর। সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন সোফি। প্রাণরক্ষা হলেও আর নিজের পায়ে দাঁড়ানো হয়ে ওঠেনি কোনোদিন। ভরসা হুইলচেয়ারই। দুর্ঘটনার মাত্র ৯ মাস পরেই সোফি সমস্ত বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে পড়েন। অংশ নেন একাধিক রিয়েলিটি শো-তে। তারপর থেকে একাধিক মডেলিংয়ের কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের একজন সক্রিয় কর্মী সোফি। নিজেই বানিয়েছেন প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ হুইলচেয়ার। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন টিভি উপস্থাপিকার কাজও।
৪/৭
এডি অ্যাডেপিটান— নাইজেরিয়ান-বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিকও একজন টেলিভিশন উপস্থাপক। সেইসঙ্গে বাস্কেটবল খেলোয়াড়। ব্রিটিশ দলের হয়ে প্যারালিম্পিকে এবং বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এনে দিয়েছেন স্বর্ণপদকও। বর্তমানে শিশুকল্যাণ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে জড়িত এডি। সেইসঙ্গে বর্ণবিদ্বেষ এবং কুসংস্কার মুছে ফেলার জন্য নিয়মিত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিজের খরচে চালান দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানও।
৫/৭
ফ্র্যাঙ্কলিন রুজভেল্ট— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম রাষ্ট্রপতি তিনি। জাতিসংঘের অন্যতম প্রস্তাবকও। বিশ শতকের প্রথম দশক থেকেই মার্কিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন রুজভেল্ট। ১৯২১ সালে ক্যাম্পোবেলো দ্বীপে ছুটি কাটাতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অসুস্থতার কারণ ছিল পোলিও। শরীরের নিচের অংশ চিরকালীন অচল হয়ে যায় তাঁর। প্রাথমিকভাবে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিলেও সরে আসেননি তিনি। ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত মার্কিন সাম্রাজ্যের দায়িত্ব সামলেছেন হুইলচেয়ারে বসেই।
৬/৭
ট্যানি গ্রে-থমসন— ব্রিটেনের অন্যতম হুইলচেয়ার রেসার হিসাবে বিবেচিত হয় তাঁর নাম। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক প্যারালিম্পিক মেডেল। ক্রীড়াক্ষেত্রে অনস্বীকার্য অবদানের জন্য ২০০৫ সালে ‘কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার’ সম্মান পান তিনি। হয়েছিলেন ব্রিটেনের সাংসদও। বর্তমানে টেলিভিশন উপস্থাপিকার কাজ করার পাশাপাশি একাধিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন ট্যানি। বিবিসি নির্বাচিত বিংশ শতাব্দীর সেরা ১০০ ব্যক্তিত্বদের মধ্যেও রয়েছে তাঁর নাম।
৭/৭
স্টিভেন হকিং— তাঁর কথা বাড়তি করে না বললেও চলে। আইনস্টাইনের পরবর্তী সময়ের সবথেকে প্রতিভাবান বিজ্ঞানী হিসাবেই উঠে আসে স্টিভেন হকিংয়ের নাম। মাত্র ২১ বছর বয়সে বিরল মোটর নিউরোন ডিজিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন হকিং। তারপর থেকে হাঁটাচলার ভরসা ছিল হুইলচেয়ার। কথা বলাও সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে গিয়েছিল প্রযুক্তির ওপরেই। চিকিৎসকরা ধরে নিয়েছিলেন হাতে আর বড়ো-জোর ২ বছর সময়। তবে সকলকে ভুল প্রমাণ করেই লড়াই করে গেছেন তিনি। আলোকিত করেছেন পদার্থবিদ্যার একের পর এক রহস্যকে। খুলে দিয়েছেন ব্ল্যাকহোল সংক্রান্ত গবেষণার একাধিক দিগন্ত।