সপ্তাহ দুয়েক আগে, মার্চ মাসের ৪ তারিখে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল সে। তবে এতদিন এতদিন কোনো নাম ছিল না তার। এবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বা বলা ভালো ‘কিভ’-এর (Kyiv) নামেই নামকরণ করা হল বিপন্নপ্রায় পূর্বাঞ্চলীয় দুই শৃঙ্গ গণ্ডার শাবকের (Eastern Black Rhino)।
সম্প্রতি, এমনই ঘটনা দেখা গেল চেক প্রজাতন্ত্রের উত্তর চেকিয়ার ডভার ক্রালভ চিড়িয়াখানায়। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার ক্রমাগত আক্রমণের প্রতিবাদেই এবার এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিল ডভার ক্রালভের সাফারি পার্ক। চিড়িয়াখানার সরকারি ওয়েবসাইটে রুশ-ইউক্রেন সংঘাত এবং গণ্ডারশাবকের নামকরণের প্রসঙ্গে বিশেষ প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
১৯৭০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তৎকালীন সময়ে পূর্বাঞ্চলীয় কৃষ্ণাঙ্গ প্রজাতির গণ্ডারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৯ হাজার। বর্তমানে তা এসে ঠেকেছে মাত্র ৮০০-তে। অর্থাৎ, বিগত পাঁচ দশকে প্রায় ৯৮ শতাংশ কমেছে তাদের জনসংখ্যা। প্রথমত, মাত্রাহীন শিকারই বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই গণ্ডার প্রজাতিকে। তাছাড়াও অরণ্যাঞ্চলের পরিমাণ কমে আসা এবং ধীর প্রজনন হারের জন্যও ক্রমশ বিপন্ন হয়ে উঠেছে এই বিশেষ প্রজাতি।
১৯৭১ সাল থেকেই কৃষ্ণাঙ্গ গণ্ডার সংরক্ষণের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্রের এই সাফারি পার্ক। এই প্রকল্পের আওতায় সবমিলিয়ে বিগত ৫১ বছরে ৪৭টি গণ্ডার শাবক জন্মগ্রহণ করেছে এই চিড়িয়াখানায়। তবে বিগত ৪ বছরে এই প্রথম কোনো গণ্ডারশাবকের জন্ম হল বলেই জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন
রুশ ভাষা আগ্রাসনেরও শিকার ইউক্রেন, ঘনাচ্ছে তর্ক
বিগত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সরাসরি সম্মুখ সমরে নেমেছিল রাশিয়া। ৪ মার্চ রাশিয়ান বাহিনী অনুপ্রবেশ করে ইউক্রেন রাজধানী কিয়েভ শহরের পূর্বাঞ্চলে। এই বিশেষ দিনেই ভূমিষ্ঠ হয়েছিল বিপন্নপ্রায় গণ্ডার শাবকটি। সেই সূত্র ধরেই তার নামকরণ। তবে অত্যন্ত সতর্কভাবেই গণ্ডার শাবকটির নাম রাখা হয়েছে ‘কিভ’। ইউক্রেনের রাজধানীর আন্তর্জাতিক পরিচিত ‘কিয়েভ’ হলেও স্থানীয়দের কথ্য ভাষায় ব্যবহৃত হয় ‘কিভ’ কথাটিই। এক্ষেত্রেও শব্দচয়নের দিক থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের কথাই যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে চেক প্রজাতন্ত্রের চিড়িয়াখানাটি…
আরও পড়ুন
মৃত্যু বনাম ভাগ্যের দ্বৈরথ, কীভাবে জন্ম হয়েছিল রাশিয়ান রুলেটের?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
রাশিয়ান তেলে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ, বিশ্বজুড়ে বাড়তে পারে পেট্রোপণ্যের দাম