১৮৭২ সালে কিংবদন্তি লেখক জুল ভার্ন লিখেছিলেন ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডে’স’। সেই গল্পে ফিলিয়াস ফগ মাত্র ৮০ দিনেই পৃথিবী ভ্রমণ সম্পূর্ণ করেছিলেন। এ তো গল্পের কথা। কিন্তু এই গল্পকেই বাস্তব করে দেখিয়েছিলেন নেলি ব্লে। ৮০ নয়, মাত্র ৭২ দিনেই বিশ্বভ্রমণ সম্পূর্ণ করেন। ১৮৯০ সালের ২৫ জানুয়ারি, নিউ জার্সিতে পৌঁছে এই অভিযান সম্পূর্ণ করেন নেলি।
এলিজাবেথ কোচরান সিম্যান, ওরফে নেলি ব্লে অভিযাত্রীর পাশাপাশি একজন উল্লেখযোগ্য সাংবাদিকও ছিলেন। সাংবাদিকতা, বিশেষ করে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের একটি দিক তৈরি করেছিলেন তিনি। মূলত মহিলাদের নিয়েই লেখালেখি করতেন তিনি। আমেরিকার পিটসবার্গ ডিসপ্যাচে কাজ করতেন। সেখানে থাকার সময়ই বিশ্বভ্রমণের কথা মাথায় আসে। জুল ভার্নের গল্পকে বাস্তবে পরীক্ষা করতে চাইছিলেন নেলি। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। ১৮৮৯ সালের নভেম্বর মাসে তিনি জাহাজে চাপেন। শুরু হয় তাঁর বিশ্বজয়ের যাত্রা। যা শেষ হয় ১৮৯০-তে।
মাত্র ৭২ দিনেই শেষ করেন এই যাত্রা। জুল ভার্নের সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ এই সময়ই। ৮০ দিনের মিথ তিনি সত্যি করলেন তার থেকেও কম দিনে। তবে নেলি ব্লে শুধু সাংবাদিক আর অভিযাত্রীই ছিলেন না, দুধের ক্যান আর গারবেজ ক্যানের দুটি বিশেষ নকশার পেটেন্টের অধিকারীও তিনি। তবে সবথেকে বেশি পরিচিতি বোধহয় সাংবাদিকতা ও বিশ্বভ্রমণের জন্যই।
নিজের জীবনে কোনো বিপদের তোয়াক্কা কখনও করেননি নেলি ব্লে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, পাগল সেজে মানসিক হাসপাতালের অব্যবস্থা সামনে এনেছিলেন। সেইরকম দুঃসাহস নিয়েই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। যার ফল, ৭২ দিনের এই বিশ্বজয়।