অন্য অনেকের মতোই একটি মিউজিক ভিডিও বানিয়েছিলেন তিনি। নিজের সৃষ্টির মাধ্যমেই প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছিলেন। সেটাই ছিল তাঁর ‘দোষ’, একটি মিউজিক ভিডিও বানানো! আর তার জন্যই কারাগারের অন্ধকারে কাটাতে হল দুটি বছর। ইজিপ্টের সেই ২৪ বছরের মিউজিক ডিরেক্টর শাদি হাবাস জেলের ভেতরেই মারা গেলেন। কী করে মারা গেলেন, তা এখনও অজানা।
সম্প্রতি তাঁর আইনজীবী আহমেদ এল-খোয়াগা এই ঘোষণাটি করেন। ২০১৮ সালের মার্চে শাদি হাবাস এই মিউজিক ভিডিওটি তৈরি করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রামি এসাম, যিনি বর্তমানে সুইডেনে বন্দি। মিশরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাতাহ এল-সিসি’কে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা হয় এই ভিডিওটি। প্রকাশ হওয়ার পরই পুলিশ শাদিকে গ্রেফতার করে। তারপর কোনো বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েও যাননি তিনি। সরাসরি তাঁকে ইজিপ্টের তোরা কারাগারে বন্দি করা হয়। ধীরে ধীরে শরীরও দুর্বল হতে থাকে তাঁর। শাদি’র আইনজীবী সূত্রে খবর, হাসপাতাল থেকে আবার কারাগারে যেদিন ফিরলেন, সেইদিনই রাতে মারা যান তিনি। কীভাবে মৃত্যু হল, এখনও কিছু জানা যাচ্ছে না।
কারাগারে থাকাকালীন গত বছরের অক্টোবরে শাদি হাবাস একটি চিঠিও লিখেছিলেন। ঠিক কী অবস্থায় ছিলেন, কেমন ব্যবহার করা হচ্ছিল, তার একটা ছবিও পাওয়া যায় ওই লেখায়। শাদি লিখছেন, “জেল কখনও কাউকে মারে না, মারে একাকিত্ব… আমি আজও গারদের পিছনে রয়েছি। ৪৫ দিন অন্তর আমাকে বিচারকের সামনে আনা হয়। তিনি আমার কাগজপত্রগুলোর দিকেও ফিরে দেখেন না। বলতে গেলে কিছু না করেই আমাকে আরও ৪৫ দিনের অন্ধকারে ঠেলে দেন। আমি এখনও এই জেলের ভেতরেই আছি। আর এই কথাটা এখানে সবাই ভুলে গেছে। এই সবকিছু আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। আমি রোজ মরছি, একটু একটু করে। আমি জানি আমার অনেক বন্ধু আছে, ভালোবাসার মানুষ আছে; কিন্তু আজ এখানে আমি একদম একা। এইভাবেই মরে যাচ্ছি…”
এইভাবেই মারা গেলেন শাদি হাবাস। নিজের কথাটি গানের মাধ্যমে বলেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা যে মুক্তমঞ্চের ভাষা বোঝে না, মানতেও চায় না। সেই আঘাতেই শেষ হল আরও এক শিল্পীর জীবন।