খড়গপুরের দুই প্রাক্তনীর তৈরি খেলনাতেই বিশ্ববাজার মাত ভারতের

বর্তমানে শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠছে খেলনা। আর বিশ্বের বাজারে শিক্ষাগত খেলনা বা স্টেমটয়ের চাহিদা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রায় ১০-১৫ শতাংশ। শুধু ভারতেই এই খেলনার বাজার প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের। কিন্তু বাজার থাকলেও এই খেলনা তৈরির দিক থেকে খানিকটা যেন ব্রাত্যই থেকে গিয়েছিল ভারত। এবার সেই শূন্যস্থান পূরণ হতে চলেছে খড়গপুর আইআইটির দুই প্রাক্তনীর হাত ধরে। বিবেক গোতেল এবং দীনেশ আভানি—তাঁদের তৈরি স্টেমটয় ‘প্লে শিফু’ এখন চলে এসেছে অরবুট, প্লাগো এবং ট্যাক্টো— আন্তর্জাতিক বাজারের তিনটি বৃহত্তম প্ল্যাটফর্মেই।

প্লেশিফু বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে। আর ব্যবহারকারী শিশুর সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ। চলতি বছর ভারতের ‘টয় ফেয়ার’ বা খেলনা মেলাতেও বিশেষভাবে জায়গা করে নিয়েছে খড়গপুর প্রাক্তনীদের এই উদ্যোগ। প্লেশিফুর মূল লক্ষ্য হল প্রথাগত পড়াশোনা এবং ব্যবহারিক শিক্ষার মধ্যে সেতু স্থাপন করা। আর সেইদিকটা মাথায় রেখেই, ২০২০-র জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী বিশেষ ব্যবস্থাপনাও গ্রহণ করেছেন ভারতীয় উদ্ভাবকদ্বয়।

বিশ্বে হাজার হাজার এই ধরনের স্টেমটয়ের অস্তিত্ব থাকলেও, প্লেশিফু অনেকটাই আলাদা তাদের থেকে। ভারতীয় উদ্ভাবকদের তৈরি এই খেলনার অভিনবত্ব হল তা ফিজিটাল মাধ্যমের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। অর্থাৎ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বোর্ড গেমও প্রাধান্য পেয়েছে সেখানে। 

আরও পড়ুন
ঘূর্ণিঝড়ের ৫-৭ দিন আগেই পূর্বাভাস, দিশা দেখাচ্ছেন খড়গপুর আইআইটি’র গবেষকরা

তবে এখনও পর্যন্ত প্লেশিফু বেশি জনপ্রিয় অরবুট এবং প্লাগো প্ল্যাটফর্মেই। যা মূলত ডিজিটাল। বিবেক ও দীনেশ জানাচ্ছেন, লকডাউনে প্রথাগত শিক্ষা বন্ধ থাকায় এক ধাক্কাতেই ব্যবহার বেড়েছে এই অভিনব এডুকেশনাল গেমের। ব্যবহারকারীর সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমান তালে বেড়েছে ব্যবহারের সময়ও। এই ফলাফল দেখে এগিয়ে আসছেন নতুন বিনিয়োগকারীরা। যা ইতিবাচক দিক হিসাবেই দেখছেন খড়গপুরের দুই প্রাক্তনি। পাশাপাশি ব্যবহার বাড়ায় প্রশস্ত হয়েছে নতুন এই গেম বা স্টেমটয় নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করার ক্ষেত্রটাও।

আরও পড়ুন
দেশের প্রথম ডিজিটাল সয়েল ম্যাপ, ৫ বছরের চেষ্টায় সাফল্য খড়গপুর আইআইটি-র

ইতিমধ্যেই এই নতুন খেলনার বাজার বৃদ্ধির ব্যাপারে বিশেষভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারতের প্রশাসন। খেলনা শিল্পের সুরক্ষার জন্য ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে বিশেষ শংসাপত্র প্রদান করেছে বিআইসি। সেইসঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থায় স্টেমটয় আন্তর্গত করাতে জোর দিচ্ছে একাধিক রাজ্য সরকারও। আগামীদিনে প্লেশিফুর হাত ধরে বদলে যেতে চলেছে গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ‘বাস্তুতন্ত্র’…

আরও পড়ুন
‘পিছুটান’ই এনে দিল সেরার স্বীকৃতি, জয়পুর-জয় খড়গপুরের গবেষকদের

Powered by Froala Editor