১ নভেম্বর থেকে শুরু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়; প্রশ্নের মুখে অসংখ্য পড়ুয়ার নিরাপত্তা

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই খুলে যাচ্ছে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিল কেন্দ্র। পুজোর পরেই ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণীর নতুন শিক্ষাবর্ষ। মঙ্গলবার সন্ধেতেই টুইটারে গোটা শিক্ষাবর্ষের সূচি জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর নভেম্বরে শুরু হবে ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস। থাকবে না কোনো গরম বা শীতের ছুটি। কেন্দ্রীয় সরকার যদি নভেম্বরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি না দেয়, তাহলে অনলাইনেই শুরু হয়ে যাবে পড়াশোনা। এমনটাই জানাল ইউজিসি। ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস। আগামী বছর ৩০ অগাস্ট থেকে শুরু হবে সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস।

আসন্ন অক্টোবর মাসের মধ্যেই ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি-র অন্তর্গত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। তবে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অবস্থার কথা ভেবেই কেন্দ্র জানিয়েছে, কেবলমাত্র এই শিক্ষাবর্ষে কোনো ছাত্র-ছাত্রী কলেজে ভর্তি হয়ে ছেড়ে দিলেও ফেরত পাওয়া যাবে ভর্তির পুরো টাকা। কলেজ বদলের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা মিলবে পড়ুয়াদের। 

কিন্তু কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই তৈরি হচ্ছে অনেকগুলি প্রশ্ন। প্রথমত অক্টোবরের মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে বলা হয়েছে ভর্তির প্রক্রিয়া। কিন্তু এখনও অবধি স্নাতক স্তরের শেষ বর্ষের পরীক্ষাই নিয়ে উঠতে পারেনি ইউজিসির অন্তর্গত অধিকাংশ কলেজ। অক্টোবরেই ঠিক করা হয়েছে সেই তারিখ। তবে পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে এখনও মাঝে মাঝেই সিদ্ধান্ত বদল করেই চলেছে ইউজিসি। অক্টোবরে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর, তার ফলাফল বেরোনোর আগেই কি তবে নতুন বর্ষে নাম লেখাবে পড়ুয়ারা? রয়ে যাচ্ছে ধোঁয়াশা।

ভারতে ছাত্রছাত্রীদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল রেলপথ। লোকাল ট্রেন ঠিক কবে থেকে চালু হবে, তাও এখনও ঘোলা জলে। ফলে পরিবহন সমস্যাও অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হয়ে দেখা দিতে চলেছে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে, তা বলাই বাহুল্য। বাস পরিষেবা শুরু হলেও, বাসে বাদুর-ঝোলা ভিড় চোখে পড়েছে সকলেরই। দেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর যোগাযোগের কথাও কি ভেবে দেখেছে সরকার? পাশাপাশি মহামারীর আবহে আগুনছোঁয়া ভাড়া অন্যান্য পরিবহনেও। আর্থিকভাবে দুর্বল পড়ুয়াদের কাছেও বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে সেই সমস্যাই। 

অন্যদিকে দেখতে গেলে লকডাউন ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে ৬ মাস। অথচ এখনও ক্রমশ অবনতির দিকেই হাঁটছে পরিস্থিতি। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আশি-নব্বই হাজারের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই এক অর্থে ঝুঁকির দিকেই কি ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? রয়ে যাচ্ছে সেই প্রশ্নও।

আরও পড়ুন
দরিদ্র পড়ুয়াদের কলেজ ফি ভরে দিচ্ছেন অধ্যাপকরাই, অনন্য নজির কর্নাটকে

ভাইরাসের প্রকোপকে অনেকটাই কমিয়ে আনার পরও যখন যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশ একের পর এক সংক্রমণ-প্রতিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। তখন ভারতের গা ছাড়া মনোভাব হাঁটছে আনলক পর্বে। রাস্তায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সংক্রমণের সংখ্যাও যে বাড়বে তার সমান্তরালে, তা অস্বীকার করার কি জায়গা রয়েছে আদৌ? নাকি বলসোনারোর মতোই এবার করোনাকে ‘সাধারণ ফ্লু’ বলেই মনে করছেন দেশের ক্ষমশালীরা? জানা নেই...

(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কলেজের মেধাতালিকায় পর্নস্টারদের নাম; শিক্ষাব্যবস্থার ‘ঠাট্টা’ই কি নগ্ন হয়ে উঠল আরও?

More From Author See More