এই শতকেই কমবে পৃথিবীর জনসংখ্যা, আশাবাদী গবেষকরা

জলবায়ু পরিবর্তন যদি এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হয়, তাহলে দ্বিতীয় গুরুতর সমস্যা অবশ্যই জনসংখ্যা বৃদ্ধি। গত কয়েক দশক ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা নিম্নমুখী হলেও তা যথেষ্ট নয়। আর এই বাড়তে থাকা জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক সম্পদ, সবকিছুর উপরেই চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আর বেশিদিন নয়। চলতি শতকেই জনসংখ্যা বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাবে, এমনকি এই শতাব্দীর শেষদিকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে জনসংখ্যা (Population)। সম্প্রতি ‘ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকরা।

ইতিহাসে শেষ জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কথা জানা যায় চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে। তখন প্লেগ মহামারীর কারণে প্রায় অর্ধেক ইউরোপ উজাড় হয়ে গিয়েছিল। তবে সেইসময় পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে জনসংখ্যার হ্রাসবৃদ্ধি কেমন হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তাছাড়া, মহামারীর কারণে তখন জনসংখ্যা কমলেও তা স্থায়ী রূপ পায়নি। ফলে আবার বাড়তে শুরু করেছিল খুব তাড়াতাড়ি। তবে এবারের ফলাফল কোনো মহামারীর ওপর নির্ভর করে হবে না। বরং এই পরিবর্তনের কাণ্ডারি আধুনিক জীবনে জন্মনিরোধকের ব্যবহার এবং অবশ্যই নারীশিক্ষার প্রসার। এমনটাই জানিয়েছেন গবেষণাদলের প্রধান তথা ইনস্টিটিউট অফ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড এভ্যালুয়েশনের অধ্যাপক স্টেইন এমিল ভোলসেট।

গবেষণা অনুযায়ী, ২০৬৪ সাল নাগাদ ক্রমশ কমতে থাকবে জনসংখ্যা। বর্তমানে পৃথিবীর গড় জন্মহার যেখানে ২.২, সেখানে ২০৬৪ সাল নাগাদ অনুপাতটি দাঁড়াবে ১.৬-এর আশেপাশে। আর ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অন্তত ৫টি দেশে জনসংখ্যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চিনও। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই পৃথক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রথমবারের মতো ভারতে জন্মহার নিরাপদ সীমায়, অর্থাৎ ২.১-এর নিচে নেমে এসেছে। তবে জন্মহার কমার সঙ্গে সঙ্গেই আরও একটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা হল, কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা হঠাৎ কমে যেতে পারে। এর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বর্তমানে যে ধরনের প্রযুক্তি মানুষের হাতে রয়েছে, তাতে এই সমস্যা খুব একটা গুরুতর হবে না বলেই মনে করছেন গবেষকরা।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মাত্র এক বছরে ৫ লক্ষ জনসংখ্যা হ্রাস, রাশিয়ার রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগ