পৃথিবীর ছায়াপথেই রয়েছে এক অন্ধকার গ্রহ, পৌঁছয় না নক্ষত্রের আলোও!

ঠিক যেন একটা পৃথিবী। আকারে, আয়তনে তেমনটাই মনে হয়। কিন্তু এর আশাপাশে কোনো সূর্য নেই। মহাশূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছে একাকী একটি গ্রহ। হ্যাঁ, ঠিক এমনই একটা গ্রহের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। তাও আমাদের ছায়াপথ এই মিল্কি-ওয়ের মধ্যেই। জার্মানির ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এই অনুসন্ধান সত্যিই অবাক করেছে মহাকাশপ্রিয় মানুষকে।

নক্ষত্রের মৃত্যুর পরেও বহু গ্রহের অস্তিত্ব থেকে যায়। মহাশূন্যে দিগ্বিদিক হারিয়ে ভাসতে থাকে তারা। এই তথ্য তাত্ত্বিকভাবে আগেই প্রমাণিত ছিল। তবে তার অবস্থান বোঝা ছিল বেশ কঠিন। আসলে কোনো নক্ষত্রের আলো এদের গায়ে এসে পড়ে না। তাই এখান থেকেও কোনো আলো আসে না দূরবীক্ষণ যন্ত্রে। এমনটাই জানাচ্ছেন ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রের লেখক রিমেক রোজ । তবে এক্ষেত্রে একটি অন্য ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর মহাশূন্যের আরও খুঁটিনাটি জানতে যে সেই প্রযুক্তি ভবিষ্যতেও নানা কাজে লাগবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।

রিমেক রোজ আরও জানিয়েছেন, এইসমস্ত ভাসমান গ্রহ বা রুগ প্ল্যানেট খুঁজতে যে পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয় তার নাম মাইক্রোলেন্সিং। আর এটি খুঁজে পেতে সময় লেগেছে ৪১ মিনিটের মাত্র কিছু বেশি। ইতিহাসে এই পদ্ধতিতে যত গ্রহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে সন্ধান পাওয়া গ্রহ এটিই। আপাতত তার নাম রাখা হয়েছে ওজিএলই-২০১৬-বিএলজি-১৯২৮। আকারে এটি প্রায় পৃথিবীর সমান। এত ছোট রুগ প্ল্যানেটের অস্তিত্বও খুব কমই আছে। সম্ভবত এটিই সবচেয়ে ছোট রুগ প্ল্যানেট। এর ৮ মহাজাগতিক এককের মধ্যে কোনো নক্ষত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিকটতম নক্ষত্র থেকে এত দূরে কোনো গ্রহকে চিহ্নিত করতেও যে মাইক্রলেন্সিং পদ্ধতি সমান পটু, সেকথাই প্রমাণ করলেন রিমেক রোজ। আর সেইসঙ্গে বিজ্ঞানীরা একথা ভেবেও অবাক হচ্ছেন, সূর্যের অস্তিত্ব মুছে গেলেই পৃথিবীর অস্তিত্ব মুছে নাও যেতে পারে। হয়তো কোথাও ভেসে বেড়াতে থাকবে লক্ষ্যহীনভাবে।

Powered by Froala Editor