একদিন, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা। সময়ের এই মাপকাঠি সকলেরই জানা। কিন্তু সেখানেই তৈরি হয়েছে জটিলতা। ইন্টারন্যাশানাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সার্ভিসের বর্তমান পর্যবেক্ষণ বলছে, পৃথিবীর আহ্নিক গতি অন্তত ০.৫ সেকেন্ড কমে গিয়েছে। সময়ের এই সামান্য পরিবর্তন সাধারণ মানুষের জন্য তেমন সমস্যার না হলেও বিজ্ঞানীরা রীতিমতো চিন্তিত।
একদিন মানে ঠিক কতক্ষণ? জ্যোতির্বিজ্ঞানের একেবারে প্রাথমিক প্রশ্ন ছিল এটি। সবার আগে হিসাব করা হত একটি সূর্যোদয় থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়। তবে তাতে একটি দিনের দৈর্ঘ্য সবসময় এক থাকে না। তাই আধুনিক হিসাবে ধরা হয় পৃথিবীর নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘুরতে যে সময় লাগবে, তাই একটি দিন। কিন্তু এই সময়ও কি সবসময় এক থাকে? অন্তত বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে রীতিমতো সমস্যা তৈরি হয়েছে।
১৯৬০ সাল থেকেই স্যাটেলাইট এবং অন্যান্য মহাজাগতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সময়ের সঠিক হিসাব রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে দুবার লিপ-সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে। লিপ-সেকেন্ড মানে ঠিক লিপ-ইয়ারের মতো। তবে কি এবারেও আর একটি লিপ-সেকেন্ড যোগ করা হবে? এই প্রশ্নের এখনও কোনো উত্তর দেননি বিজ্ঞানীরা। তবে ৫০ বছরের মধ্যে বারবার পৃথিবীর আহ্নিক গতির সময় কেন কমে আসছে, এটাই একটা বড়ো প্রশ্ন।
প্রথমে মনে করা হয়েছিল পৃথিবী সূর্যের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলেই তার আহ্নিক গতি বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু আরও নিখুঁত পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব যতটা কমেছে তার থেকে অনেক কমেছে দিনের দৈর্ঘ্য। অতএব এর কারণ অন্যকিছু। এমনকি বিশ্ব-উষ্ণায়নকেও এর জন্য দায়ী করছেন কেউ কেউ। মেরু অঞ্চলের বরফ গলে ভরের বণ্টন বদলে যাচ্ছে। আর এটাই সম্ভবত দিনের দৈর্ঘ্য কমে আসার প্রকৃত কারণ। তবে আরও বিশদে গবেষণা না করে কোনোকিছুই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন
মহাকর্ষ সূত্রের সঙ্গেই লেখা নোট, পৃথিবীর ‘শেষ দিন’ জানিয়ে গিয়েছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ঘনকাকার একক দিয়েই তৈরি পৃথিবী, প্লেটোর মতকে সমর্থন জানালেন ভূতাত্ত্বিকরা