গোটা আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে রয়েছে এক প্রকাণ্ড ব্ল্যাকহোল। ধীরে ধীরে সমস্ত নক্ষত্র, গ্রহদেরই কাছে টেনে নিচ্ছে সে। পৃথিবীর ভবিতব্য লেখা রয়েছে এই সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের হাতেই। তা জানা ছিল এতদিন। কিন্তু নতুন গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা ভাবা হয়েছিল তার থেকেও ২০০০ আলোকবর্ষ কাছে রয়েছে পৃথিবী। তার দিকে পৃথিবীর ছুটে চলার গতিবেগও পূর্ব-গণনার থেকে অনেকটাই বেশি।
কিন্তু কীভাবে এল এই ফলাফল? পৃথিবীর অবস্থান আকাশগঙ্গার মধ্যেই। ফলে পৃথিবীর আসল গতিবিধি নজর করতে গেলে তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে গোটা ছায়াপথের বাইরে থেকে। তা কার্যত অসম্ভব। এবং এই একই কারণে ভুল মান এসেছিল পূর্ববর্তী গণনায়। তবে এই সমস্যার সমাধান করে জাপানের রেডিও-অ্যাসট্রোনমি প্রোজেক্ট ‘ভেরা’।
জাপানের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবসারভেটরি থেকে ভেরার মাধ্যমেই তৈরি করা হয় ছায়াপথের মধ্যে ৯৯টি বস্তুর প্রকৃত ভেক্টর গতিপথ। কাজে লাগানো হয় অ্যাস্ট্রোমেট্রিকে। এই পদ্ধতিতে প্রাপ্ত সমস্ত মহাজাগতিক বস্তুর গতিবিধির ম্যাপ থেকেই জানা যায় পৃথিবী থেকে দৈত্যাকার ওই ব্ল্যাকহোলের প্রকৃত দূরত্ব। যার মান ২৫৮০০ আলোকবর্ষ। ১৯৮৫ সালের গণনা অনুযায়ী তা এতদিন ভেবে আসা হয়েছিল ২৭৭০০ আলোকবর্ষ।
পাশাপাশি ব্ল্যাকহোলকে আবর্তন করতে করতে ছায়াপথের কেন্দ্রের দিকে পৃথিবী প্রতি সেকেন্ডে এগিয়ে যাচ্ছে ২২৭ কিলোমিটার। এমনই জানাল নতুন গবেষণা। যার মান পূর্ববর্তী ২২০ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডের থেকে ৭ কিলোমিটার বেশি।
গত আগস্ট মাসেই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ভেরা অ্যাস্ট্রোনমিকাল ক্যাটালগ প্রকাশ করেছিল জাপানের অ্যাস্ট্রোনমিকাল সোসাইটি। বলাই বাহুল্য বিজ্ঞানের একটা বড়ো ধাপই এগিয়ে গেল এই নতুন টেলিস্কোপ ও ম্যাপিংয়ের হাত ধরে। কিন্তু তার মধ্যেই যেন আরও একবার প্রকট হয়ে উঠল পৃথিবীর ধ্বংসের একটি জল্পনা। তবে নীলগ্রহকে এই ব্ল্যাকহোলের শুষে নিতে এখনও অনেকটা সময়ই বাকি। ততদিন আদৌ টিকে থাকবে তো মানব সভ্যতা? কে জানে!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ব্ল্যাকহোলের রহস্যে উঁকি দিয়ে পদার্থবিদ্যায় নোবেল তিন বিজ্ঞানীর