অ্যাথলেটিক্সে বয়স একটি প্রতিবন্ধকতা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফুরিয়ে আসে যে-কোনো অ্যাথলিটের কেরিয়ার। তবে ৫৩ বছর বয়সে প্যারালিম্পিকের মঞ্চে সোনা জিতে তিনি প্রমাণ করে দিলেন, তাঁর কাছে বয়স কেবল সংখ্যামাত্র। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে ডাচ সাইক্লিস্ট জেনেট জ্যানসেনকে নিয়েই। গতকাল, টোকিও প্যারালিম্পিকে ৩৩ বছর পর ফের সোনার স্বাদ পেলেন জেনেট। তৈরি করলেন এক অনন্য ইতিহাস।
একেবারেই জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয়েছিল জেনেটের এই লড়াই। অপরিণত পা নিয়েই ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন তিনি। বহু চিকিৎসাতেও লাভ হয়নি কিছু। শেষে বাধ্য হয়েই বাদ দিতে হয় দুটি পা-ই। চিরকালের মতো মুছে যায় হাঁটাচলার সম্ভাবনা। তখন থেকেই তাঁর সঙ্গী হয়ে উঠেছিল হুইলচেয়ার। কিন্তু নিজেকে আবদ্ধ না রেখে, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ক্রীড়াক্ষেত্রকে বেছে নিয়েছিলেন জেনেট।
শুধু সাইকেল রেস নয়, একই সঙ্গে হুইলচেয়ার বাস্কেটবল এবং অ্যাথলেটিক্সেও প্রায় তিন দশক ধরে রীতিমতো রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন জেনেট। ১৯৮৮ সালের সিওল প্যারালিম্পিক দিয়ে আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শুরু হয়েছিল তাঁর। আর সে-বছরেই তিন-তিনটি ভিন্ন ইভেন্টে সোনা নিয়ে আসেন জেনেট। ২০০৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্যারালিম্পিকে অংশ নিলেও আর স্বর্ণজয় সম্ভব হয়নি। সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রুপো আর ব্রোঞ্জ নিয়েই। তারপর সাময়িকভাবে জাতীয় দল থেকে বিরতি নেন তিনি। অবশ্য প্যারালিম্পিকে অংশ না নিলেও থেমে থাকেনি ক্রীড়াজীবন। চালিয়ে গিয়েছিলেন হুইলচেয়ার বাস্কেটবল।
২০১৬ সালে রিও প্যারালিম্পিকে আবার প্রত্যাবর্তন জেনেটের। সেবছরেও অধরা থেকে যায় সোনা। সম্প্রতি টোকিও অলিম্পিকে সেই ৩৩ বছরের আক্ষেপ মেটালেন জেনেট। গত ৩১ আগস্টই এইচ৪-৫ বিভাগে সাইক্লিং-এ ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন ডাচ সাইক্লিস্ট। তারপর গতকাল এইচ১-৪ বিভাগে এল স্বর্ণ পদক। ৫৬.১৫ সেকেন্ডে তিনি শেষ করেন সাইক্লিং-এর রোড রেস। তৈরি করেন এক নতুন ইতিহাস। উল্লেখ্য, এটি তাঁর দশম প্যারালিম্পিক পদক। তবে এখানেই থেমে থাকছেন না জেনেট। আগামী প্যারালিম্পিকেও তাঁকে পুনরায় দেখা যাবে স্বমহিমায়। এমনটাই জানাচ্ছেন ডাচ তারকা…
আরও পড়ুন
বোমা-বিস্ফোরণে পা হারিয়েও অশ্বারোহণ, প্যারালিম্পিকে রূপকথা লিখছেন বেয়াত্রিচে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
একই দিনে ৩ বার বিশ্বরেকর্ড, প্যারালিম্পিক জ্যাভলিনে স্বর্ণজয় সুমিতের