১। দমদম পার্ক সর্বজনীন
এবার ৬৮ বছরে পা দিল দমদম পার্ক সর্বজনীন। এবারে তাদের বিষয় ‘অমৃতের সন্ধানে’। বিষয় ভাবনা এবং রূপায়ণে রয়েছেন রাজু সরকার। আবহ সঙ্গীতে অভিজিৎ চক্রবর্তী এবং প্রতিমা শিল্পী সনাতন পাল। মণ্ডপ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন শস্যসম্ভার। সাংসারিক নানা দ্রব্যে ভরে উঠেছে মণ্ডপের ভাঁড়ার।
আরও দেখুন
উত্তর কলকাতার পুজো
২। দমদম পার্ক ভারতচক্র
১৯ বছরে পড়ল দমদম পার্ক ভারতচক্রের পুজো। এবারের বিষয় ‘ধীরে আটে বয়না / তার লাগ কেউ পায় না’। গোটা মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে ধর্ম-সমন্বয়ের নানা চিত্র, বিভিন্ন আকারে এবং আলোকসজ্জায় ধরা পড়েছে সেই ছবি। মণ্ডপ পরিকল্পনায় ও রূপায়ণে রয়েছেন পূর্ণেন্দু। কাগজের নানা অলঙ্করণে সেজে উঠেছে মণ্ডপ। প্রতিমা শিল্পী অরূপ কর, প্রতিমা সজ্জাতেও ব্যবহৃত হয়েছে কাগজের অলঙ্করণ।
৩। দমদম পার্ক তরুণ দল
এবার দমদম পার্ক তরুণ দলের ভাবনায় উঠে এলো তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়। সমাজে অবহেলিত এই তৃতীয় অস্তিত্বকে পুরাণ এবং প্রচলিত আখ্যান দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন শিল্পী অনির্বাণ। চমকপ্রদ আবহ সঙ্গীতে শতদল চট্টোপাধ্যায়। মূর্তি নির্মিত হয়েছে কৃষ্ণের আদলে। কৃষ্ণ আর দুর্গার এই অপরূপ সমন্বয় ঘটিয়েছেন শিল্পী সনাতন দিন্দা।
আরও দেখুন
দক্ষিণ কলকাতার পুজো
৪। তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন
বিধাননগর স্টেশনের খুব কাছেই এই পুজো। তেলেঙ্গাবাগান এ-বছর পূর্ণ করল ৫৪ বছর। এবারের বিষয়ভাবনা ‘পুনর্জন্ম’। পরিকল্পনা, আবহ সঙ্গীত এবং প্রতিমা নির্মাণে শিল্পী প্রদীপ রুদ্র পাল। সহযোগিতা করেছেন শিল্পী মলয় দাশ এবং শিল্পী অমিত বরণ রায়। জন্মচক্রের নানা মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। প্রতিমা এখানে একটি বৃত্তের মধ্যে অধিষ্ঠিত, তাকে ঘিরে সচল রয়েছে আরও তিনটি চক্র। সমগ্র মণ্ডপেই রয়েছে নানা বৃত্তের আকার।
৫। মাস্টারদা স্মৃতি সংঘ
৬৭ বছরে পড়ল কেষ্টপুরের মাস্টারদা স্মৃতি সংঘের পুজো৷ কেষ্টপুর স্টপেজের খুব কাছেই এই পুজোমণ্ডপ। এবারের বিষয় ‘রবির উদয় / হোক মনুষ্যত্বের বোধোদয়’। এক ধূসর বর্ণে রেঙে উঠেছে মণ্ডপের বহির্ভাগ, অনেকটা পাথরবর্ণের। পদ্মে অধিষ্ঠিত রয়েছে সূর্যদেবের পদযুগল। মণ্ডপের মধ্যেও সূর্যকেন্দ্রিক নানা পটচিত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
৬। কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন অধিবাসীবৃন্দ
কেষ্টপুর স্টপেজের খুব কাছেই এই পুজো। এবছর পা দিল ১৭ তম বর্ষে। প্রতিমা শিল্পী পরিমল পালের হাতে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার প্রতিমা। মণ্ডপ পরিকল্পনায় রয়েছেন শিল্পী অমর সরকার৷ উদ্বাস্তু সমস্যা এবং কাঁটাতারের যন্ত্রণা ফুটে রয়েছে মণ্ডপসজ্জায়। এর মাঝেই মানুষে মানুষে ভেদ টেনেছে নানা অস্ত্রের ভয়, সেনাবাহিনীর পাহারা। এর মধ্যেই মানুষ নেমেছে দেবী আরাধনায়।
৭। দমদম পার্ক তরুণ সংঘ
এক অভিনব এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা উপস্থাপন করেছে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ৷ এবারের ভাবনা ‘২০১৯-এ ২০৯১’। যেভাবে ফুরিয়ে আসছে বিশ্বের অক্সিজেন ভাণ্ডার, পুড়ে যাচ্ছে বিশ্বের ফুসফুস আমাজন, তাতে খুব শীঘ্রই নেমে আসবে অক্সিজেন সংকট। সোনার চেয়েও মহার্ঘ্য হয়ে উঠবে তা। দিকে দিকে উঠবে হাহাকার, মানুষকে মানুষ হত্যা করবে অক্সিজেন না দিয়ে, চুরি হবে অক্সিজেন সিলিণ্ডার, হবে কালোবাজারি। ২০৯১ সালের সেই সম্ভাব্য ভবিষ্যতকেই তুলে ধরা হয়েছে। সমগ্র মণ্ডপের ভাবনা ও রূপায়ণে শিল্পী রিন্টু দাস।
৮। লেকটাউন অধিবাসীবৃন্দ
লেকটাউন অধিবাসীবৃন্দের ভাবনায় এবার উঠে এসেছে বৃক্ষদেবতার রূপকল্প। দেবী এখানে প্রকৃতির আদিবাসী জননী৷ আদিবাসী রমণীর মতো করেই সেজে উঠেছে দেবী এবং তাঁর সন্তানেরা। দেবীসজ্জায় রয়েছে পালকের ব্যবহার। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই রয়েছে বৃক্ষদেবতার মূর্তি, তা ডালপালা মেলে ছড়িয়ে পড়েছে আকাশের দিকে।
৯। গোলাঘাটা সম্মিলনী
লেকটাউনের কাছেই গোলাঘাটা সম্মিলনীর পুজো৷ এবার এদের ৪১তম বর্ষপূর্তি৷ বিষয় ভাবনায় এবং রূপায়ণে রয়েছেন শিল্পী স্বরূপ নন্দী। বিষয় হল ‘বাদক’। একজন বাদকের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে মণ্ডপসজ্জায়। সমগ্র মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে দরমার বেড়া এবং নানা সাধারণ ঘর তৈরির সামগ্রী। মন্ডপের মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম চায়ের দোকান, অনেকগুলি মাইলফলক। প্রতিমার রূপও বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একজন ঢাকির সাধারণ নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের একটা ঝলক পাওয়া যাবে এখানে।
১০। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব
গত কয়েক বছর ধরেই শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ঐতিহাসিক নানা স্থাপত্যকে তুলে ধরেন তাঁরা। এবারেও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলের একটি কাল্পনিক প্রাসাদ তুলে নির্মাণ করেছেন শিল্পী। সনাতনী প্রতিমা নির্মাণ করেছেন ভাস্কর সনাতন রুদ্র পাল। স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিত করা হয়েছে মাতৃপ্রতিমা।