'গণশক্র' সিনেমাটির কথা মনে পড়ে? চরণামৃতের জল থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের শরীরে! সেরকমই অবস্থা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের কাছে গঙ্গার ঘাটে। প্রতিদিন এই ঘাটে স্নান করতে আসা মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫০,০০০। অথচ নদীর জলের যা অবস্থা তাতে অক্সিজেনের পরিমাণ ভয়ানক কম। মাছেরাও ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারছে না। এমনকি নানা প্রাণঘাতী রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে মানুষের শরীরে। এমনটাই জানাচ্ছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট।
আরও পড়ুন
পানের অযোগ্য কর্নাটকের প্রতিটি নদীর জলই, চিন্তায় পরিবেশবিদরা
পশ্চিমবঙ্গের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে রাজ্যের নদীগুলির ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে। ১৭টি নদীর অবস্থা তো রীতিমতো খারাপ। কোনোভাবেই এই ১৭টি নদীতে স্নান করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। অথচ এই নদীগুলিকে অবলম্বন করেই বেঁচে থাকেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। স্নান করেন নদীর জলেই। এমনকি অন্যান্য নদীর তুলনায় গঙ্গার জল আরও বেশি দূষিত বলে জানাচ্ছে রিপোর্ট।
আরও পড়ুন
আত্মহত্যা বাড়ছে আমেরিকায়, অপরাধ-প্রবণতাও, দায়ী পরিবেশ দূষণ
গঙ্গার ৪৪টি ঘাট থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। আর তাতেই দেখা গেছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণেশ্বরের নিকটবর্তী ঘাটের। বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ডের পরিমাণ অত্যন্ত খারাপ। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণও মারাত্মক কম। এই জলে মাছেরাও ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারছে না বলেই উল্লেখ রিপোর্টে।
আরও পড়ুন
ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী, কমছে জল, অ্যানিমেশনে সেটাই ধরলেন বিজ্ঞানী
মূলত দূষণের কারণেই যে নদীগুলির এরকম ভয়াবহ পরিণতি, কার্যত সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পর্ষদের চেয়ারম্যান। আবর্জনার ভারে জলের স্রোত প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছে। নদীগুলি থেকে সমস্ত ধরনের নিকাশি ব্যবস্থা অবিলম্বে সরিয়ে ফেলা উচিত বলেই মনে করছেন তিনি। ১০ বছর আগে নদীগুলির দূষণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই ১০ বছরে যে সেই চেহারাটা অনেকটাই খারাপ হয়েছে, সে বিষয়ে কোনপ সন্দেহই নেই।
আরও পড়ুন
বিলুপ্ত ও বিপন্ন জলজ প্রাণীদের স্মরণে কেরালায় তৈরি হল সমাধিক্ষেত্র
নদীকে কেন্দ্র করেই একসময় সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। আর সভ্যতার যাত্রাপথে মানুষ নদীকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সবচেয়ে বেশি। মানুষকে অবিলম্বে সচেতন হতে হবে। সেইসঙ্গে নদীগুলিকে বাঁচাতে প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগও। নাহলে জলপ্রবাহের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনই ক্ষতির শিকার হবেন নদীকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকা মানুষরাও।