কয়েকদিন আগেই পছন্দের সামগ্রী অর্ডার করেছিলেন ই-কমার্স (E-Commerce) ওয়েবসাইট থেকে। ফোনকল জানান দিল, সেই জিনিস এসে হাজির হয়েছে আপনার দোরগোড়ায়। কিন্তু কোথায় কে? দরজা খুলে নজরে এল না কোনো ডেলিভারি বয়ের অস্তিত্ব। তবে ফোন কল? না, সেটা অবশ্য ভুয়ো নয়। জিনিস এসেছে ঠিকই। কিন্তু কোনো মানুষ নিয়ে আসেনি সেটি। বরং, সেই সামগ্রী নিয়ে বাড়ির সামনে হাজির হয়েছে ইলেকট্রনিক ড্রোন (Drone Delivery)।
কল্পবিজ্ঞানের গল্প মনে হলেও এমনটাই সত্যি। এবার ভারতের বুকেই চালু হতে চলেছে ড্রোন ভিত্তিক লাস্ট-মাইল ডেলিভারি পরিষেবা। আর তার নেপথ্যে রয়েছে হরিয়ানার সংস্থা জিপ ইলেকট্রিক ডেলিভারি। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, এবার থেকে আয়তনে ছোটো যে কোনো সামগ্রী গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে তারা ব্যবহার করবে টিএসএডব্লু ড্রোন। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, পুনে ও মুম্বাই— ভারতের এই চার শহরে শুরু হতে চলেছে এই পরিষেবা। ব্যবহৃত হবে ২০০টির বেশি ইলেকট্রনিক ড্রোন।
২০১৭ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল হরিয়ানার লজিস্টিক কোম্পানি জিপ ইলেকট্রনিকের। প্রধান লক্ষ্য ছিল, লজিস্টিক পরিষেবায় কার্বন ফুটপ্রিন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনা। আর সেই লক্ষ্যেই, সাধারণ যানবাহন ব্যবহারের পরিবর্তে ইলেকট্রিক স্কুটারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার পন্থা অবলম্বন করেছিল জিপ ইলেকট্রনিক। বিগত কয়েক বছরে ভারতের মেট্রো শহরগুলিতে বেশ জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে এই সংস্থা। এবার নতুন বছরে আরও একটি অভিনব পদক্ষেপ নিল তারা।
কিন্তু সামগ্রীর নিরাপত্তা? সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ড্রোনেই থাকছে বিশেষ লকার। তার মধ্যেই সুরক্ষিত থাকবে গ্রাহকদের কেনা সামগ্রী। নির্দিষ্ট ওটিপি-র মাধ্যমেই একমাত্র খোলা যাবে সেই লকার। ফলে, ডেলিভারির সময় সামগ্রী বেহাত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি আকাশপথে ডেলিভারি হওয়ায় যানজটের কারণে দেরি হওয়ার কোনো আশঙ্কাও থাকবে না। বিশেষ করে ওষুধ, খাবার এবং মুদি সামগ্রীই দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে এই ড্রোনগুলি।
কয়েকদিন আগে স্বপ্নেও কি ভাবা যেত এমনটা? তবে প্রযুক্তির দৌলতে যেন বাস্তবায়িত হচ্ছে সায়েন্স-ফিকশনের এক একটা প্রেক্ষাপট…
Powered by Froala Editor