যারা বারাণসী যান, তাঁরা একবার না একবার বিশ্বনাথ শিবের মন্দির দর্শন করেনই। এবার সেই মন্দিরেও জারি হল পোশাক ফতোয়া। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এবার থেকে বিশ্বনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে গেলে কোনও জিন্স, টি-শার্ট, বলা ভাল কোনও আধুনিক পোশাক পরা চলবে না। এমন সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক নতুন করে দানা বাঁধল।
কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির শুধু ভারতের নয়, বিশ্বের অনেকের কাছেই অন্যতম টুরিস্ট ডেস্টিনেশন। মন্দির, পরিবেশ, তৎসংলগ্ন গঙ্গার ঘাট এবং গঙ্গারতি— সমস্ত কিছু মিলিয়ে সবসময়ই ভিড় লেগেই থাকে এখানে। এতদিন কোনো পোশাক ফতোয়া ছিল না এখানে। কিন্তু এবার মন্দিরে ঢুকতে গেলে পুরুষদের জন্য ধুতি-পাঞ্জাবি ও মহিলাদের জন্য শাড়ি বাধ্যতামূলক করল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও, সকাল ১১টা পর্যন্ত গর্ভগৃহে পুজো দেওয়া যাবে। কিন্তু এই নয়া পোশাক বিধি কেন লাগু করা হল, সে সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এই মুহূর্তে ভারতের নানা জায়গায় হিন্দুত্ব ও সাম্প্রদায়িকতা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তার সঙ্গে এই ঘটনাকে মিলিয়ে দেখছেন অনেকে। একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক সময় এখনও কেন এরকম পোশাক ফতোয়া, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। সাম্প্রতিক সময় শবরীমালা, আহমেদনগরের শনি মন্দিরের মতো ঘটনাও দেখেছেন ভারতবাসী, যেখানে মেয়েদের পুজো করারও অধিকার ছিল না। এখন অবশ্য সেই নিয়ম আর নেই, কিন্তু তার জন্য যে সংগ্রাম করতে হয়েছে, সেটার কথা তো ভোলার নয়। এইসব ঘটনা কি গোঁড়া হিন্দুত্ববাদেরই প্রতিফলন? নতুন করে হিন্দু ধর্মের যে একটি ‘বিশেষ সংজ্ঞা’ তৈরি করা হচ্ছে দেশ জুড়ে, এসব কি তারই অংশ? প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে…