শিশুরা যতদিন মাতৃদুগ্ধ পান করে, ততদিন তার অন্য কোনো খাবারের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এর পরেই শুরু হয় অপুষ্টি। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে অপুষ্টি আজও এক জ্বলন্ত সমস্যা। এই সময়ে শিশুদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে আসাম মিক্স। ভারতের বুকে একেবারে দেশীয় উপাদান দিয়ে তৈরি প্রথম উইনিং মিক্স। উত্তর-পূর্ব ভারতে অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম অস্ত্র এই আসাম মিক্স। এবার দিল্লির সেন্টার ফর কোয়ালিটি অ্যান্ড ফুড সেফটি সংস্থার পক্ষ থেকে ‘ফুড হিরো অফ ইন্ডিয়া’ (Food Hero Of India) সম্মান পেলেন আসাম মিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ বাসন্তী বড়ুয়া (Dr Basanti Baroova)।
আসাম এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ডঃ বড়ুয়া। একসময় গুয়াহাটিতে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফুড প্রসেসিং টেকনোলজির সদস্যও ছিলেন তিনি। তবে ক্রমশ তাঁর মনে হয়, শিক্ষাক্ষেত্রের আলোচনার থেকেও অনেক বেশি প্রয়োজন বাস্তব সমস্যার মোকাবিলা করা। আর এই উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই ২০১০ সালে তিনি তৈরি করে ফেললেন আসাম মিক্স। এই খাদ্যের উপাদান নির্বাচনের ক্ষেত্রে আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের চিরাচরিত খাদ্য সংস্কৃতির মেলবন্ধনও ঘটালেন তিনি। কয়েক বছরের মধ্যেই কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা থেকে স্বীকৃতিও পায় আসাম মিক্স।
শিশু অপুষ্টি প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আসাম মিক্স ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে আসাম সরকার। এছাড়াও সেফ দ্য চিলড্রেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বা অক্সফ্যামের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ভরসা রেখেছে আসাম মিক্সের উপরেই। সব মিলিয়ে একটি বাণিজ্যিক উদ্যোগ হলেও তার মূল উদ্দেশ্য মুনাফাবৃদ্ধি নয়। বরং উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে শিশু অপুষ্টির ধারণাটাই মুছে ফেলতে চান ডঃ বড়ুয়া। তিনি নিজেও ‘স্বদেশ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছেন। ইউনিসেফের মতো সংস্থার সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি। তাঁর এই নিরলস প্রচেষ্টাকেই এবার সম্মান জানাল সেন্টার ফর কোয়ালিটি অ্যান্ড ফুড সেফটি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও। এই স্বীকৃতি আগামী দিনে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও ছড়িয়ে দেবে ডঃ বড়ুয়ার এই উদ্যোগ।
আরও পড়ুন
সাহিত্য অকাদেমির সর্বোচ্চ সম্মান, 'ফেলো' নির্বাচিত শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মহাকাশ-ফেরত ধানের চাষ চিনে, ভবিষ্যতে খাদ্য সংকট মেটাবে এই ‘স্বর্গীয় চাল’