বহু বছর পর, হুগলি নদীতে আবার দেখা গেল সাউথ এশিয়ান রিভার ডলফিন। যাকে আমরা চিনি গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুক নামেই। সম্প্রতি কলকাতার একাধিক ঘাট থেকে দেখতে পাওয়া গেছে শুশুক। এই ঘটনাকে ইতিবাচক হিসাবেই ধরছেন পরিবেশবিদরা।
শুশুক লম্বায় প্রায় ছ’ফুট পর্যন্ত হয়, ওজনে ১০০ কেজি। ডলফিন মূলত বসবাস করে সামুদ্রিক জলে। কিন্তু শুশুক পৃথিবীর একমাত্র ডলফিন প্রজাতি, যার বসবাস স্বাদু জলে। গত কয়েক বছরে শুশুকের সংখ্যা কমেছে ব্যাপক হারে। এই স্তন্যপায়ী প্রজাতিকে নথিভুক্ত করা হয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায়। ২০১৮-র শেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, গাঙ্গেয় ডলফিনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৩।
সম্প্রতি এক পরিবেশ বিশারদ, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বাবুঘাটের কাছেই হুগলি নদীতে দেখতে পান দুটি গাঙ্গেয় শুশুক। তবে ছবি তুলতে পারেননি তিনি। তাঁর মতে, দূষণ বা অনবরত স্টিমার চলাচলের জন্য শুশুকের দেখা পাওয়া যেত না। লকডাউনে দূষণের পাশাপাশি বন্ধ নদী পারাপারও। তাই আবার পুরোনো ছন্দে ফিরে আসতে দেখা যাচ্ছে শুশুকদের।
কলকাতা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে হুগলিতে মাঝে মাঝে দেখা যায় শুশুক। কিন্তু একদম শহরের কেন্দ্রে শুশুকের দেখা পাওয়া বিরলতম ঘটনা। বন্যপ্রাণী চিত্রগ্রাহক গণেশ চৌধুরী সম্প্রতি এক জোড়া ডলফিনের ছবি তুলেছেন। কলকাতার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই। তিনি জানান, আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে মাঝে মাঝেই দেখা যেত শুশুকদের। খোদ কলকাতার বিভিন্ন ঘাটেই। কিন্তু দূষণ যত বেড়েছে, গঙ্গাবক্ষ থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে এই প্রাণীটি। লকডাউনে যে গঙ্গার জলের দূষণমাত্রা অনেকটাই কমেছে, স্পষ্টতই তার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ঘটনা।