স্বজন হারানোর বেদনা সহ্য করতে না পেরে অভিন্ন গন্তব্যের পথে পা বাড়ান অনেক মানুষই। শোকে-দুঃখে আত্মহত্যা করেন মানুষ। আর যারা মানুষ নয়? দুঃখ তাদেরও হয়। কিন্তু আত্মহত্যার পথ তারা বেছে নিতে পারে কি? উত্তর দিয়ে গেল ১২ বছরের জয়া। উত্তরপ্রদেশের এই কুকুরটি মনিবের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে বেছে নিল আত্মহত্যার রাস্তাই।
১২ বছর আগে জয়াকে একটি হাসপাতালের পাশ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ডা. অনীতা রাজ সিং। জন্মের পরেই তার মা তাকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। ছোট্ট কুকুরটির শরীরে তখন বাসা বেঁধেছিল অসংখ্য পোকা। তাকে পরিষ্কার করে, ধীরে ধীরে সুস্থ করে তুলেছিলেন অনীতা। আর সেই থেকে কুকুরটিও পরিবারেরই একজন হয়ে উঠেছিল।
এর মধ্যেই কিছুদিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন অনীতা। স্বাস্থ্য বিভাগের ডিরেক্টর অনীতা নিজে অনেক রোগীর প্রাণ বাঁচালেও, তিনি নিজে সুস্থ হয়ে উঠতে পারলেন না। বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয় কানপুরের বাসগৃহে। আর তার পর থেকেই অদ্ভুত ব্যবহার করতে থাকে জয়া। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডাকতে ডাকতে উঠে যায় বাড়ির ছাদে এবং সেখান থেকে সোজা নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
যদিও সঙ্গে সঙ্গেই জয়াকে নিয়ে হাসপাতালের পথে রওয়ানা হয়েছিলেন অনীতার ছেলে তেজস। কিন্তু অনীতার মতোই বাঁচানো গেল না জয়াকেও। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ায় কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। আর এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করে দিল, আবেগে অনুভূতিতে ভালোবাসায় মানুষের থেকে ওরা পিছিয়ে তো নেইই। বরং আজকের প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে মানুষ তার ভালোবাসাকে 'সেকি ইমোশন' বলে দূরে সরিয়ে দিলেও ওরা তা দেয়নি। ভালোবাসার প্রতিদান ওরা ফিরিয়ে দিতে জানে।
আরও পড়ুন
কলেজ স্কোয়ার থেকে উদ্ধার মুণ্ডহীন কুকুরের দেহ, আর কতটা নৃশংস হবে মানুষ?
ছবি - প্রতিকী
আরও পড়ুন
কুকুরের মুখে বাঁধা টেপ, খাদ্য-পানীয় ছাড়াই কেটেছে দু-সপ্তাহ; অমানবিক নির্যাতন কেরালায়
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বাইকের পিছনে কুকুর বেঁধে পরিক্রমা, এবার নৃশংসতার সাক্ষী খোদ রাজধানী