৩০ বছর অজ্ঞাতেই মহিলা হয়ে জীবন অতিবাহিত করেছেন। অবশেষে ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানা গেল, তিনি মহিলা নন। জিনগতভাবে একজন পুরুষ। এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস হাসপাতাল।
অ্যান্ড্রোজেন সেনসিটিভ সিন্ড্রোম। এই বিরল রোগটিতে আক্রান্ত হন প্রতি ২২ হাজার মানুষের মধ্যে একজন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি এই রোগেই আক্রান্ত হয়েছেন বলেই জানান চিকিৎসকরা।
কিছুদিন আগে থেকেই বীরভূমের এই বাসিন্দার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল অসহ্য পেটের যন্ত্রণায়। পরীক্ষা করতে ধরা পড়েছিল টেস্টিকুলার ক্যানসারে। তারই চিকিৎসা করতে ছুটে এসেছিলেন কলকাতায়। সেখানে অঙ্কোলজিস্ট অনুপম দত্ত পুনরায় তাঁর বেশ কয়েকটি টেস্ট করার সামনে আসে আসল পরিচয়। দেখা যায় তাঁর জিনে ‘XX’ ক্রোমোজমের বদলে রয়েছে পুরুষ ক্রোমোজম ‘XY’। শরীরে রয়েছে অবিকশিত অণ্ডকোষও। যার কারণে তাঁর ধরা পড়েছে টেস্টিকুলার ক্যানসার। তবে পাশাপাশি তাঁর দেহে মহিলা হরমোনের প্রভাবে নারীসুলভ কণ্ঠ এবং দৈহিক গঠন। ছিল মহিলা জননেন্দ্রিয়ও। ফলে এতদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করে এলেও এই বিষয়টি অজ্ঞাত থেকে গেছে তাঁর নিজের কাছেও। তবে ডিম্বাশয় কিংবা জরায়ুর উপস্থিতি জন্ম থেকেই ছিল না তাঁর দেহে।
চিকিৎসকরা বলছেন, সম্ভবত এই রোগ জিনগত। খুব বেশি তথ্য নেই এখনও। কারণ আক্রান্ত ওই ব্যক্তির মামারবাড়ির দুই আত্মীয়ও আক্রান্ত এই রোগে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। শুরু হয়েছে ক্যানসারের চিকিৎসাও। চলছে কেমোথেরাপি।
গত ৯ বছর বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। গর্ভধারণের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে আকস্মিকভাবেই এমন ঘটনার সামনা-সামনি হওয়ায় মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন তিনি। চিকিৎসার পাশাপাশিই তাঁর এবং তাঁর স্বামী, উভয়েরই কাউন্সিলিং করা হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসক অনুপম দত্ত।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদজ্ঞাপন, আলোয় সেজে উঠল হাডসন সেতু