হাসপাতালের পার্কিং লট। সেখানে এসেই থামল একটা সাধারণ মারুতি। তারপর সেখান থেকেই বেরিয়ে এলেন ব্রুস ওয়েন ওরফে ব্যাটম্যান। তারপর হাসপাতালের দরজা ঠেলেই ঢুকে পড়লেন ভেতরে। অবাক স্বাস্থ্যকর্মীরা। সোজা চলে গেলেন ওয়ার্ডে। ডেকে নিলেন এক খুদে রোগীকে। তার হাতে করা রয়েছে ওষুধের চ্যানেল। স্যালাইন আর ওষুধের সেই ট্রলি ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে তাঁর মাতৃস্থানীয় কোনো মহিলা। মুখে একটাও কথা নেই তার। বাকরুদ্ধ হয়েই সে জড়িয়ে ধরল স্বপ্নের চরিত্রকে।
না, ব্যাটম্যানের নতুন কোনো সিক্যুয়াল নয়। বাস্তবেই ঘটেছে এই ঘটনা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল ভিডিওই। আসলে ব্যাটম্যানের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই ব্যক্তিই ছোট্ট শিশুটির চিকিৎসক। যে বয়সে সবে কুঁড়ি ফোটার কথা, সেই বয়সেই মারণ রোগ চেপে ধরেছে তাকে। ক্যানসার। দশের গণ্ডি না পেরনো বালককেই ভেতর থেকে শুষে নিচ্ছে কর্কট রোগ। আর তাকে হারানোর জন্যই বেশ কিছুদিন ধরেই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই চিকিৎসক।
তবে কথায় আছে না, মনেই জোরেই পেরিয়ে যাওয়া যায় সবকিছু? শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি তাই মানসিকভাবেও সেই শক্তি জোগাতেই এই উদ্যোগ চিকিৎসকের। বারবার কথা বলে তিনি জেনেছিলেন ক্ষুদের স্বপ্নের নায়ক হলেন ব্যাটম্যান। জীবনে অন্তত একবার তাঁর সঙ্গে সে দেখা করবেই। কিন্তু সত্যিই কি আছেন ব্রুস ওয়েন? কোথায় পাওয়া যাবে তাঁকে? নিজেই সমাধান খুঁজেছিলেন চিকিৎসক। সম্পূর্ণ ব্যাটম্যানের কস্টিউমে সাজিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। বাকিটা তো ভিডিওতেই ধরা পড়েছে।
এমনই সংবেদনশীল এই ভিডিও, যে চোখের জলেই ভাসলেন নেটিজেনরা। ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে মানবিকতা, পেশাদারিত্বই শেষ কথা হয়ে দাঁড়াচ্ছে শিক্ষা থেকে চিকিৎসা সমস্ত ক্ষেত্রে। এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে যেন উল্টো ছবিই দেখালেন এই চিকিৎসক। হাসপাতালের এক রোগীর জন্য এভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগ আর ক’জনই বা নিতে পারেন? এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশিই, ছোট্ট কিশোরের আরোগ্য প্রার্থনাও করেন নেটিজেনরা। এসবের জোরেই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে সে, এটুকুই তো আশা রাখার...
Powered by Froala Editor