এ যেন সত্যিই ‘চাঁদের পাহাড়’, হিরের সন্ধানে ছুটছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অজস্র মানুষ

কাতারে কাতারে মানুষ ছুটছেন। গাঁইতি, শাবল নিয়ে বসে পড়ছেন মাটি খুঁড়তে। হবে নাই বা কেন? তাঁরা যে ‘চাঁদের পাহাড়ে’র সন্ধান পেয়ে গিয়েছেন! অবশ্য এটা আফ্রিকার সাভানা অঞ্চলের দৃশ্য নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার কাওয়া-হালতি গ্রামের কাছেই এক পাথুরে অঞ্চলে হাজির হয়েছেন সারা দেশের মানুষ। সম্প্রতি এখান থেকেই একটি পাথর কুড়িয়ে পেয়েছেন এক ভাগ্যান্বেষী। সাধারণ পাথর নয়, এটা হিরের আকরিক বলেই বিশ্বাস সকলের। আর গোটা দেশের মানুষই তো লড়ছেন দারিদ্রের সঙ্গে। এই অবস্থায় কয়েকটা হিরেও যদি সংগ্রহ করে ফেলা যায়, তাহলেই তো ভাগ্য খুলে যাবে।

গোটা আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে শিল্পায়নে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ সেখানেই বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। এমনটাই জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন। তার মধ্যে অতিমারী করোনায় কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। আইএলও-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালের প্রথম চারমাসে দেখা গিয়েছে দেশের ৪৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের কোনো স্থায়ী জীবিকা নেই। আর মহিলাদের কাজের সুযোগ তো নেই বললেই চলে। আর এই সময়েই হঠাৎ সুখবর নিয়ে এলেন মেন্দো সাবেলো নামের এক ব্যক্তি। তিনি গ্রামে ফিরে সবাইকে দেখালেন থলি ভর্তি উজ্জ্বল পাথর। এই পাথর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় সব মানুষেরই চেনা। আর তার পরেই গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ভাগ্যান্বেষীদের অভিযান। পাথর নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে।

তবে ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পক্ষ থেকে ভূতাত্বিকদের একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে জায়গাটি জরিপ করার জন্য। পাশাপাশি, পাথরগুলি সত্যিই খনিজ হিরে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। যদি সত্যিই সেখানে হিরের খনি থেকে থাকে, তাহলে তার আয়তন এবং হিরের পরিমাণ সম্বন্ধেও রিপোর্ট চেয়েছে সরকার। আর এই সমস্ত কাজের জন্য অবিলম্বে জায়গাটি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। কিন্তু ক্ষুধার্ত মানুষদের বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টার সামনে প্রশাসনকে চিরকালই থেমে যেতে হয়েছে। তবে তাঁরা আর কতটুকুই বা কুড়িয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? শেষ পর্যন্ত সেখানে হিরের খনি আবিষ্কার হয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
হিরের খনির জন্য ২ লক্ষ বৃক্ষচ্ছেদনের পরিকল্পনা, দেশজুড়ে সরব পরিবেশকর্মীরা