ইটভাটার শিশুদের কাছে পৌঁছে গেল খাবার, লকডাউনে ফের মানবিক মুখ পুলিশের

গোটা দেশ এখন রীতিমতো সন্ত্রস্ত। করোনা নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই কাটছে এই লকডাউনের সময় বিপদে পড়েছেন দরিদ্র মানুষ, দিনমজুর ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা। আয় নেই, ঘরে ভাঁড়ারও ফুরিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় কী করবেন তাঁরা, কোনো দিশা পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে আবারও পুলিশের মানবিক মুখ দেখল রাজ্য। ডায়মন্ডহারবার মহিলা থানার উদ্যোগে, সেখানকার স্থানীয় ইটভাটার শিশুদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হল খাবার।

কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছিল লকডাউনের পরই। এলাকার ভবঘুরে, ভিখারি মানুষরা যাতে এই পরিস্থিতিতে একটু খেতে পারেন, সেটাই ছিল প্রথম উদ্দেশ্য। সেইভাবেই কাজ শুরু করেছিলেন ডায়মন্ডহারবার মহিলা থানার পুলিশকর্মীরা। সেই কাজ করতে করতেই নজরে আসে স্থানীয় ইটভাটা। সেখানেই বসবাস বেশ কিছু পরিবারের। রয়েছে ছোটো ছোটো বাচ্চারাও। লকডাউনের জেরে কাজ এখন বন্ধ। থেমে গেছে উপার্জনও। তাহলে কী করে চলছে সংসার? ওই বাচ্চাগুলোই বা কী খাচ্ছে? এই ভাবনা থেকেই ইটভাটার ওই বাচ্চাদের খাওয়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারপর থেকে এখনও অবধি তিনবার এই কাজটি করা হয়েছে।

এই পুরো উদ্যোগ নিয়েই কথা বলছিলেন ডায়মন্ডহারবার মহিলা থানার এলএসআই অমৃতা দাস পাখিরা। প্রহরকে তিনি জানালেন, “রাজ্যের অন্যান্য অনেক থানাতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমরাও সহকর্মীরা সবাই নিজেদের বেতন থেকেই এই আয়োজনটা করছি। নিজেরাই রান্না করে ওই বাচ্চাদের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ৩০-৪০ জনের মতো বাচ্চাদের কাছে পৌঁছচ্ছি আমরা। এরা তো দিনমজুর, এঁদের তো এখন আয়ও নেই। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কাজ করা হচ্ছে; সেইসঙ্গে আমরা নিজেরাও শুরু করেছি। আপাতত ঘর থেকেই শুরু করেছি এই কাজ। পরবর্তীতে আরও যতবার প্রয়োজন পড়বে, আমরা এগিয়ে আসব।”

এভাবেই লকডাউনের পরিস্থিতিতে মানুষ এগিয়ে আসছে মানুষের পাশে। উর্দি সরিয়ে যেখানে এগিয়ে আসে কিছু হাত। এমন বিপদের মুহূর্তে সবাই যাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঁচতে পারি, সেটা নিশ্চিত করতে পারি না আমরা? এরকম ভাবেই ব্যক্তিগত উদ্যোগ দিয়েই শুরু করা যাক। পরে সেটাই ছড়িয়ে যাবে আরও বড়ো জায়গায়।