কালীপূজা অথবা দীপাবলির মরসুম, অথচ বাজির শব্দে প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে না – এমন পরিস্থিতি কল্পনা করা অনেকের পক্ষেই মুশকিল। হাজার প্রচার, অনুরোধ, আইন সত্ত্বেও বদল ঘটেনি প্রায় কিছুরই। প্রায় সারা দেশেই যখন এমন অবস্থা, তামিলনাড়ুর দুটি গ্রাম উঠে এল খবরে। হ্যাঁ, ব্যতিক্রমের নজির হসেবেই।
তামিলনাড়ুর ত্রিচি জেলার ঠপ্পুপাত্তি ও সম্পাত্তি গ্রামের মানুষরা বছরের পর বছর শব্দহীন দীপাবলি উদযাপন করে আসছেন। এই রকম অভিনব উদযাপনের পেছনে রয়েছে এক মহৎ কারণ। একটি বটগাছে বাস করা কয়েক হাজার বাদুড়কে বাঁচানোর তাগিদ থেকেই গ্রামবাসীদের উদ্যোগ। দুটি গ্রামের প্রায় ৫০০ জন গ্রামবাসী বাদুড়দের ঈশ্বর হিসেবে পূজা করেন। কিন্তু বাদুড় হঠাৎ ‘ঈশ্বর’ হয়ে উঠল কী করে?
সে এক শতাব্দীপ্রাচীন গল্প। গ্রামে এক ব্রাহ্মণ বসবাস করতেন বহুদিন আগে। একদিন তিনি হঠাৎ দেখতে পান, বাড়ির পাশের একটা গাছে ঝুলছে বেশ কয়েকটা বাদুড়। ব্রাহ্মণ তাদের সন্তানস্নেহে পরিচর্যা করেন এবং তাদের অস্তিত্বের সংকটের মুখে পড়তে পারে এমন ক্রিয়াকলাপ তিনি নিষিদ্ধ করেন। সেই থেকেই শব্দবাজি পোড়ানো সেখানে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
শুধু এই দুটি গ্রাম নয়, ভিলুপুরম জেলার কাজুপেরুমপক্কম গ্রামেও শব্দহীন দীপাবলি বছরের পর বছর রীতি মেনে উদযাপিত হয়ে আসছে।
উৎসবের হুল্লোড়েও, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর সুস্থতা বজায় রাখাই ‘আধুনিকতা’। সেখানে তামিলনাড়ুর তিনটি গ্রাম এমন নজির সৃষ্টি করতে পারলে, বাকি দেশ পারবে না কেন!