এক দশকের প্রকল্পে বদলেছে চেহারা, দিল্লির ‘সুন্দর বাগিচা’-কে স্বীকৃতি ইউনেস্কোর

৯০ একরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে আছে মোঘল আমলের নানা ইতিহাস। এতদিন এই একটাই পরিচয় ছিল দিল্লির আজিমবাগের। কিন্তু আজ তার চেহারা বদলে গিয়েছে আমূল। বদলে গিয়েছে নামও। সুন্দর বাগিচার গেট পেরোলেই প্রকৃতির নির্মল শোভা চোখ জুড়িয়ে দেয়। কানে আসে পাখিদের কিচিরমিচির। এদিক ওদিক থেকে উড়ে আসতে পারে কিছু প্রজাপতিও। আর এই নবরূপায়ণের স্বীকৃতি এল ইউনেস্কোর কাছ থেকে। সম্প্রতি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মোট ৭টি সংরক্ষণ প্রকল্পের মধ্যে জায়গা করে নিল দিল্লির ‘সুন্দর বাগিচা প্রকল্প’।

২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর ঐতিহাসিক সৌধগুলির সংরক্ষণ প্রকল্পের সাফল্যের নিরিখে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে ইউনেস্কো। আর এবছর সেই তালিকায় স্থান পেল ভারতের দুটি প্রকল্প। একটি দিল্লির ‘সুন্দর বাগিচা প্রকল্প’ আর অন্যটি কেরালার ‘গুরুবায়ুর প্রকল্প’। ২০০৭ সালে মোঘল আমলের প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র আজিমবাগ নবরূপায়ণের পরিকল্পনা নেয় কর্তৃপক্ষ। কিছুদূরেই সম্রাট হুমায়ূনের সমাধি। সেখানে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকলেও অনেকেই আসতেন না আজিমবাগে। আর তার অন্যতম কারণ ছিল এখানকার প্রাচীন পরিবেশ ও সংরক্ষণের অভাব। অবশেষে ১ দশকের বেশি সময় ধরে নবরূপায়ণে পর ২০১৮ সালে পর্যটকদের জন্য খুলে যায় আজিমবাগ। তবে তার নতুন নামকরণ হয় সুন্দর বাগিচা।

বর্তমানে জায়গাটি শুধু ৫০টির বেশি ঐতিহাসিক সমাধির ক্ষেত্র নয়। বরং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ করে। ২৬০টি প্রজাতির গাছ তো আছেই। তার সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে প্রায় ৮০ প্রজাতির পাখি এবং ৫০ প্রজাতির প্রজাপতি। এর আগেই বাগানের মধ্যে ৫০টি সমাধির মধ্যে ১২টি সমাধিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। আর এবছর এশিয়া-পেসিফিক অঞ্চলের অন্যতম সফল সংরক্ষণ প্রকল্পগুলির মধ্যেও জায়গা করে নিল এই বাগান। ইতিহাসের সঙ্গে প্রকৃতির এমন মেলবন্ধনে সত্যিই যেন বদলে গিয়েছে পুরো ছবি।

Powered by Froala Editor