রাতের অন্ধকারে বে-আইনিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে মনিরের একাংশ। সমগ্র মন্দিরটাই ভেঙে ফেলে বহুতল তৈরির পরিকল্পনা চলছে। আর সেই প্রক্রিয়া রুখে দিতে এবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন স্থানীয় মুসলিমরা। সম্প্রতি দিল্লির জামিয়া নগর (Jamia Nagar) এলাকায় ঘটেছে এমনই ঘটনা। হিন্দু মন্দির বাঁচানোর পাশাপাশি এলাকায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির পরিবেশ তৈরির বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়িয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ।
প্রায় ১ হাজার মুসলমান পরিবারের বাস জামিয়া নগর এলাকায়। তার মধ্যে ৪০-৫০টি হিন্দু পরিবারও রয়েছে। সমগ্র এলাকায় ওই একটিই মন্দির আছে। ১৯৭০ সালে তৈরি মন্দিরটিতে এখনও প্রতিদিন পুজোর আয়োজন করা হয়। এই নিয়ে কোনোদিন কোনো ধরনের অশান্তি তৈরি হয়নি। তবে সম্প্রতি এক প্রোমোটারের নজর পড়েছে মন্দিরটির উপর। গত সপ্তাহেই হঠাৎ একদিন স্থানীয় মানুষরা দেখলেন, মন্দিরের সামনে ধর্মশালাটির একাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের ভিতর থেকে ৭-৮টি মূর্তিকেও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর আগেই এমনটা সন্দেহ করেছিলেন অনেকে। কিন্তু তখন পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এই ধরনের কোনো নির্মাণের কথা তাঁরা জানেন না। ফলে বোঝাই যায় পুরো প্রক্রিয়াটি চলেছে বে-আইনিভাবে।
আদালতে অভিযোগ জানানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, মন্দির ভেঙে কোনোরকম বে-আইনি নির্মাণ তাঁরা করতে দেবেন না। এমনকি এই বিষয়টিকে ঘিরে এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসার বাতাবরণ তৈরির পরিকল্পনা চলছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই এবার আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব সচদেবের ডিভিশন বেঞ্চ ইতিমধ্যে সমস্ত ধরনের নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে এলাকায় যাতে কোনোভাবেই হিংসা না ছড়ায়, সেই বিষয়েও প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।
বর্তমান সময়ে সারা দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা এক জ্বলন্ত সমস্যা। এই হানাহানির মধ্যেও যেভাবে জামিয়া নগর অঞ্চলের মানুষ সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছেন, তাকে কুর্নিশ জানাতেই হয়।
Powered by Froala Editor