কৃষিক্ষেত্রেও ‘বেসরকারিকরণ’। কাজেই আশঙ্কা দেখা যাচ্ছিল অব্যহত থাকবে খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি। অন্যদিকে সেই লাভও পুরোপুরি যাবে না কৃষকদের কাছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তেই সারা ভারত জুড়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই রাস্তায় নেমেছিলেন কৃষকরা। বেছে নিয়েছিলেন আন্দোলনের পথ। দিল্লি সরকার আগেই জানিয়েছিল এই আন্দোলনের কৃষকদের সঙ্গেই রয়েছেন তাঁরা। এবার কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন দিল্লির সাধারণ মানুষও।
দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ— বিভিন্ন অঞ্চল থেকেই মাইলের পর মাইল হেঁটে তাঁরা পৌঁছেছেন রাজধানীতে। কৃষি আইনের প্রতিবাদেই এই অভিযান। কিন্তু গতি যে আরও মন্থর হয়ে যাচ্ছে পদে পদেই। জলকামান, টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জ, ব্যারিকেড সেসব টপকাতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু কতদিন অভুক্ত হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা?
যাঁদের জন্যই দানাপানি জোটে সারা দেশের মুখে, তাঁরাই ভাগ্যেই জুটবে না সামান্য খাবার? করোনা মহামারী এবং এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই তাঁদের জন্য এগিয়ে এলেন দিল্লির সাধারণ মানুষ। দিল্লির মসজিদগুলিই এখন খাবারের বন্দোবস্ত করছেন কৃষকদের জন্য। রাজধানীজুড়েই এখন এমনই মানবিক দৃশ্য।
শাসকের থেকে দাবি ছিনিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবেই লড়াই করতে হবে। এমনটাই জানাচ্ছেন দিল্লির এক ইমাম। যাঁরা শস্য উৎপাদন করেন তাঁদের জন্যই মানবতার স্বার্থে এই উদ্যোগ। সমাজকর্মী নাদিম খান সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন একাধিক ছবি। চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বরও। তো তা প্রকৃতপক্ষে অটোজেনারেট নয়, মসজিদেরই কর্মকর্তাদের। খাদ্যের প্রয়োজনে কৃষকরা ফোন করলেই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে খাবার। যতদিন এই আন্দোলন চলবে, ততদিনই এই পরিষেবা জারি রাখবে বলে জানাচ্ছে দিল্লির মসজিদগুলি।
যে দিল্লি আন্দোলন ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, সেই দিল্লিরই আরেক ছবি এটি। এটাই তো ভারত। এটাই তো বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। আন্দোলনকে সামনে রেখেই সম্প্রীতির এক অন্য বার্তাই দিচ্ছে রাজধানী। মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই অমোঘ বাণী, ‘সকল ভারতবাসীই আমার ভাই’...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘মারের মুখের উপর দিয়ে’ ফুল নয়, প্রতিবাদ আনলেন কৃষকরা