ভারতে আশ্রয় নিলেন মায়ানমারের পুলিশ আধিকারিকরা

তাঁরাই একসময়ে ছিলেন সাধারণ মানুষের রক্ষাকর্তা। অথচ এখন সাধারণ মানুষরাই যেন তাঁদের প্রধান শত্রু। তাঁদের দিকেই এখন তাক করতে হচ্ছে বন্দুকের নল, ছুঁড়তে হচ্ছে জল-কামান কিংবা স্টান্ট গ্রেনেড। পুলিশ হলেও অভ্যুত্থানের মতাদর্শের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারছেন না অনেকেই। শরিক হতে চাইছেন না এই নৃশংস বর্বরতার। তাই নিজের দেশ ছেড়ে সপরিবারে ভারতে আশ্রয় নিলেন মায়ানমার পুলিশের বহু অফিসার।

তবে শুধু মায়ানমার পুলিশ আধিকারিকরাই নন, অনেক সাধারণ মানুষও পালিয়ে এসেছেন সীমান্ত পেরিয়ে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন মোট ২৬৪ জন বর্মাবাসী। তার মধ্যে ১৯৮ জনই পুলিশ আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই চলছে লাগাতার অবস্থান। সাবেক রাষ্ট্রকর্তা আন সু কি-র মুক্তি চেয়ে পথে নেমেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আর সেই প্রতিবাদ দমিয়ে রাখতেই চলছে যদৃচ্ছ অত্যাচার। জলকামান, রাসায়নিক প্রয়োগ, গ্রেপ্তার, রাবার বুলেট, যোগাযোগ বিচ্ছেদ এসব তো চলছেই। পাশাপাশি গুলিতে নিহত হয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি নাগরিক।

এত কিছুর পরেও বিন্দু মাত্র অবস্থান থেকে সরে আসেননি মায়ানমারের সাধারণ মানুষ। পুলিশি নৃশংসতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রতিবাদের মাত্রা। তবে সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশের অভ্যন্তরে থেকে সেই আন্দোলনে সামিল হওয়ার পরিণতি যে ভয়ঙ্কর হতে পারে, তাতে আর নতুন করে বলার কী? তাই সামরিক শাসনের বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেতেই ভারতে চলে এসেছেন সচেতন পুলিশ আধিকারিকরা। সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরামে প্রবেশ করে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন ভারতীয় বাহিনীর কাছে। 

আরও পড়ুন
অগ্নিগর্ভ মায়ানমার, ‘ঢাল’ নিয়ে পথে সাধারণ মানুষ

শরণার্থী হিসাবে তাঁদের আপাতত জায়গা করে দেওয়া হয়েছে মিজোরামেই। তবে তাঁদের সূত্রের খবর, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন আরও কয়েক ডজন মায়ানমার পুলিশ আধিকারিক। এই ঘটনা প্রমাণ দিল, মায়ানমারের সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ বিভাগের মধ্যেই সর্বসমর্থিত নয় এই অভ্যুত্থান। বরং, বৃহত্তর অর্থে তা যেন একনায়কতন্ত্রেরই রূপ…

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মায়ানমারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে ঝাঁঝরা ১৮ বিক্ষোভকারী, বিশৃঙ্খলা চরমে