জিমন্যাস্টিকসের প্রথম ভারতীয় বিচারক হিসেবে অলিম্পিকে দীপক খাবরা

হকি, শুটিং, কুস্তি, বক্সিং-এর মতো একাধিক ক্রীড়াক্ষেত্রে অলিম্পিকের মঞ্চে সাফল্য পেলেও, আজও ভারতের কাছে অধরা থেকে গেছে জিমন্যাস্টিক। ২০১৬-র অলিম্পিকে সামান্যের জন্য পদক হাতছাড়া হয় ভারতীয় জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকারের। চলতি বছরে সেই শূন্যস্থান পূরণের লক্ষ্যেই অলিম্পিকে লড়তে চলেছেন বঙ্গতনয়া প্রণতি। তবে এবারের অলিম্পিকে একমাত্র তিনি নন, উপস্থিত থাকবেন আরও এক ভারতীয় জিমন্যাস্ট। দীপক খাবরা।

অলিম্পিক শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ। তার মধ্যেই সুখবর এসে হাজির হল ভারতীয় ক্রীড়ামহলে। এবার অলিম্পিকে জিমন্যাস্টিকসের পুরুষ বিভাগের বিচারকের আসনে থাকবেন ৩৩ বছর বয়সী প্রাক্তন ভারতীয় তারকা দীপক খাবরা। সম্প্রতি টোকিও অলিম্পিকের আয়োজকদের থেকে সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত চিঠি পেলেন তিনি। আর সেইসঙ্গেই তৈরি হল এক নতুন ইতিহাস। কেন না অলিম্পিকে জিমন্যাস্টিকসের প্রথম ভারতীয় বিচারক তিনিই। 

ক্রীড়াজীবনে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন দীপক। তবে অলিম্পিকে লড়াই করার স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল তাঁর কাছে। ১২ বছর বয়সে দীপকের হাতেখড়ি হয়েছিল জিমন্যাস্টিকসে। সেটা ২০০০ সাল। সেসময় সুরাটের বাসিন্দা ছিলেন দীপক। একদিকে যেমন আর্থিক অনটন ছিল, তেমনই ছিল অনুশীলনের বিশেষ পরিকাঠামোর অভাব। তা সত্ত্বেও অক্লান্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই রাজ্যস্তরে চ্যাম্পিয়ন হন দীপক। ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত একটানা গুজরাটের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন তিনি। খেলেছেন জাতীয়স্তরেও। ২০০৭ সালে ন্যাশনাল গেমসেও অংশ নিয়েছিলেন দীপক। তবে চূড়ান্ত সাফল্য আসেনি। অল্পদিনের মধ্যেই দীপক বুঝতে পেরেছিলেন, আসলে অন্যান্য প্রতিযোগীদের থেকে অনেকটা দেরিতে কেরিয়ার শুরু করেছেন তিনি। ফলত, শরীরের সঙ্গে মস্তিষ্কের সামঞ্জস্য বজায় রাখা বেশ খানিকটা কঠিন হয়েই দাঁড়িয়েছিল তাঁর কাছে।

আরও পড়ুন
স্বপ্ন থামতে দেননি শ্রমিক দিদা, দারিদ্রকে হারিয়ে অলিম্পিকে নাতনি রেবতী

প্রথম দশকের শেষের দিকেই নিজের কেরিয়ার বদল করেন তিনি। সরাসরি খেলার মাঠ ছেড়ে বেছে নেন বিচারকের জীবন। তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও নেন দীপক। ২০১০ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে বিচারক হিসাবে অভিষেক হয় তাঁর। সেটাই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতীয় বিচারক হিসাবে তাঁর অভিষেক। তারপর ২০১৪ সালে এশিয়ান গেমস, ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ গেমস এবং যুব-অলিম্পিকেও বিচারকের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন
দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে টোকিও অলিম্পিক, জরুরি অবস্থা জারি জাপানে

গত বছরই তাঁর সঙ্গে টোকিও অলিম্পিকের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিলেনর আয়োজকরা। তবে সবটাই অনিশ্চিত ছিল করোনা মহামারীর কারণে। সম্প্রতি যবনিকাপতন হল সেই রহস্যের। শেষ পর্যন্ত পাকাপাকি চিঠি হাতে পেলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন জিমন্যাস্ট। এও যেন এক স্বপ্নপূরণ। অলিম্পিকের মঞ্চে হাজির হওয়ার সুযোগ পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তিনি…

আরও পড়ুন
পদকজয়ের স্বপ্ন নিয়ে অলিম্পিকে তামিলনাড়ুর পুলিশ কনস্টেবল

Powered by Froala Editor