কোভিডে ৭০ শতাংশ মৃত্যুর পিছনেই দায়ী হাসপাতালে দেরিতে পৌঁছনো, জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব

গতকাল দেশের সব রেকর্ডই ভেঙে গিয়েছিল। এক ধাক্কায় একদিনে আক্রন্ত হয়েছিলেন ৬২১৭০ জন মানুষ। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যাও ছাড়িয়ে গিয়েছিল ২০ লক্ষ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গেও গতকাল আক্রান্ত হন ২৯৫৪ জন মানুষ। যা রাজ্যে করোনার নতুন রেকর্ড। মারা যান ৫৬ জন। যার মধ্যে শুধু কলকাতারই ২৫ জন। রাজ্যে এই উত্তরোত্তর মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এল স্বাস্থ্য দপ্তরের।

গত কয়েক সপ্তাহের কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুর ঘটনাগুলির তথ্য পর্যবেক্ষণ করেন রাজ্যের চিকিৎসকরা। সেখান থেকেই জানা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসার শরণাপন্ন হতে দেরী হয়ে গেছে আক্রান্তদের। মোট মৃত্যুর মধ্যে ৭০ শতাংশের পিছনেই রয়েছে সময়মতো হাসপাতালে না পৌঁছানোর মতো কারণ। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের শরীরে অন্যান্য রোগের উপস্থিতিও বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর প্রবণতাকে।

করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত মে মাস থেকে এমন বহু ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে। বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানান রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। অন্যদিকে মানুষের গাফিলতির ব্যাপারও রয়েছে। অনেকেই আক্রান্ত হলেও পরীক্ষা করাচ্ছেন না। ফলে অনেকটাই ক্ষতিসাধন হয়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায়, কঠিন হয়ে পড়ছে চিকিৎসকদের কাজও।

তিনি জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যে ৮৩টি কোভিড হাসপাতালে রয়েছে সাড়ে ১১ হাজার শয্যা। সেফ হোম মিলিয়ে সংখ্যাটা সাড়ে ২৩ হাজার। সেখানে এখনও অবধি শূন্য রয়েছে ৬০ শতাংশ শয্যাই। তারপরেও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কেন আক্রান্তদের, উঠছে সেই প্রশ্নই। তবে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও কমেছে মৃত্যুর হার। এই মুহূর্তে রাজ্যে মৃত্যুর হার ২.২ শতাংশ। যা দেশের মৃত্যুর হারের (২.৭ শতাংশ) থেকে কম। পাশাপাশিই বেড়েছে রাজ্যের সুস্থতার হারও। যা এখন প্রায় ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। 

আরও পড়ুন
প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একটি করে প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে করোনা, ভয়াবহ পরিসংখ্যানের সাক্ষী পৃথিবী

চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনার। তবে এই মুহূর্তে বিশেষ হাসপাতালের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারীর এই পরিস্থিতিতে সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যেই চলেছে রাজ্য, জানান মুখ্যসচিব। তাতে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

আরও পড়ুন
করোনা সংক্রমণ লাগামহীন রাজ্যে, সাপ্তাহিক দু’দিন লকডাউনের সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
প্রতি ৩০ মিনিটে একজন করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু রাজ্যে, উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দপ্তর