বিষ্ণুপুরের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে মল্ল রাজবংশের নাম। তবে এখন রাজপাট নেই। তবুও এলাকাবাসীর কাছে রাজা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন পরিবারের জ্যেষ্ঠ বংশধর সলিল সিংহ ঠাকুর। আজ সকালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়ায় বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুরে।
সপ্তম শতাব্দী থেকে ব্রিটিশ শাসনের সূচনাকালের আগে অবধি প্রায় সহস্র বছরের রাজত্ব ছিল মল্ল রাজাদের। ১৭৪১-১৭৫১ সালে মধ্যে বেশ কয়েকবার বর্গিহানার ফলে পতন হয় এই রাজবংশের। এখন সামান্য জমিদার বাড়ি হিসাবেই টিকে আছে এই রাজবংশ। প্রাচীন মল্লগড়ের রাজবাড়িতেই সেই পরিবারের বাস।
শনিবার সকালে এলাকার মানুষ চমকে ওঠেন গুলির শব্দে। এই শব্দ যে মল্লগড় রাজবাড়ি থেকেই, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি মানুষের। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজার দেহ পাওয়া গেছে মল্লগড়ের রাজবাড়িতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে রাজার মৃতদেহ। মৃতদেহের পাশেই পাওয়া যায় তাঁর লাইসেন্স করা একনলা বন্দুকও। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এই বন্দুকই গর্জে উঠেছিল।
তবে এখনও স্পষ্ট নয়, রাজা সলিল সিংহ ঠাকুরের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রহস্য। তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। পুলিশের ধারণা আত্মহত্যাই করেছেন তিনি। যদিও রিপোর্ট না আসা অবধি জোর গলায় কিছু দাবি করতে রাজি নয় প্রশাসন। এ বিষয়ে নির্বাক রাজপরিবারের সদস্যরাও।
আরও পড়ুন
আত্মহত্যা করেননি ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ; হত্যা করা হয়েছিল তাঁকে!
মল্লবাড়ির রাজপরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো। এমনকি ইতিহাস ঘাঁটলে পাওয়া যাবে, বিপত্তারিণী পুজোর কিংবদন্তিও জড়িয়ে এই রাজপরিবারের সঙ্গেই। পরিবারের এই সমস্ত উৎসব-অনুষ্ঠানে বেশ সক্রিয় ভূমিকাতেই দেখা যেত রাজা সলিল ঠাকুরকে। তাঁর অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিষ্ণুপুর...
আরও পড়ুন
‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী সাহিত্যের পণ্ডিতরা’, কিশোর কবির আত্মহত্যার পিছনে কোন রহস্য?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
শুধু জুন মাসেই কলকাতায় আত্মহত্যা করেছেন ৪৫ জন, জানাল লালবাজার