এনআরসি এবং বাঙালির অবমাননা - গানে, কবিতায়, নাটকে প্রতিবাদ ছাত্রছাত্রীদের

এনআরসি। বাংলায় যাকে বলে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী। বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে গোটা দেশে অন্যতম চর্চিত বিষয় হল এটি। কারও কাছে এটা প্রয়োজনীয়, কারও কাছে অবান্তর, কারও কাছে এটা প্রচণ্ড বিভীষিকা। কলমের এক খোঁচায় আসাম থেকে ১৯ লক্ষ মানুষ রাতারাতি ‘বিদেশি’ হয়ে গেলেন। তাঁদের না আছে দেশ, না আছে মাথার ওপর ছাদ। না আছে বাঁচার ঠিকানা। আর এই এনআরসি নিয়েই ১৮-২০ নভেম্বর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আরও পড়ুন
ভিটেমাটি ছেড়ে আবার উদ্বাস্তু-জীবন? বাংলায় বাড়ছে এনআরসি-আতঙ্ক

‘জন্মভূমির বর্ণপরিচয়’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বক্তব্য, এটি একটি ফ্যাসিবাদ বিরোধী লোকসাংস্কৃতিক নাগরিক উদ্যোগ। আসামে এনআরসি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গোটা দেশে এটিকে শুরু করার কথা বলা হয় কেন্দ্রের তরফ থেকে। তার সূত্র ধরেই এই পশ্চিমবঙ্গতেও এনআরসি শুরুর তোড়জোড় করা হচ্ছে। সমাজের প্রায় সর্বত্রই কান পাতলে এখন এইটাই শোনা যাবে। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। অবস্থা এমন, ইতিমধ্যেই বাংলায় বেশ কিছুজন আত্মহত্যাও করেছেন। আয়জকদের আরও বক্তব্য, শুধু এনআরসি নয়, সেই সঙ্গে চলছে বাংলার সংস্কৃতির অবমাননা। কখনও মূর্তি ভাঙা হচ্ছে, কখনও একটা নির্দিষ্ট ভাষাকে সর্বত্র চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই সবকিছুর প্রতিবাদ করতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। তিনদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানের সূচি নীচে দেওয়া হল—

১৮ই নভেম্বর, ২০১৯
দাস্তান-ই-রাস্তা : সারাদিনব্যাপী একটি পথনাটক উৎসব
সন্ধ্যায়ঃ  দর্শন - The Vision (A Silent Drama)

১৯শে নভেম্বর, ২০১৯
কলরবের ঐকতান ( স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিতর্ক সভা, বক্তব্য, গান, নাচ,  গ্রাফিতি, ও অন্যান্য গ্রুপ পারফরম্যান্স)
সন্ধ্যায় : গণবিষাণ (লড়াই এর গান)

২০শে নভেম্বর
সারাদিনব্যাপী অতিথি শিল্পীদের গান
সন্ধ্যায় নাটক “মৈমনসিংহ গীতিকা”, উপস্থাপনায় ‘নয়ে নাটুয়া’, অভিনয়ে গৌতম হালদার ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ         

উদ্যোক্তারা সমাজের সমস্ত মানুষকে নভেম্বরের ১৮ থেকে ২০ হাজির থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যাতে সমাজের সর্বত্র এই সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া যায়, একযোগে আন্দোলনে সামিল হওয়া যায়, একে অন্যের পাশে থাকা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন তাঁরা।