‘দরিদ্র পর্যটন’। নামটা বিতর্কিত হতে পারে, কিন্তু ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে দাঁড়িয়ে এই পর্যটন ভালরকম প্রভাব ফেলছে। তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি। ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ‘পর্যটন’ ক্ষেত্র হিসেবে ইতিমধ্যেই গণ্য হয় এই বস্তি।
মুম্বইয়ের একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান এই ধারাভি বস্তির। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বসতি এই অঞ্চলটি এশিয়ার সবথেকে বড় বস্তি। আর এই বস্তিই বিদেশিদের কাছে অন্যতম ‘সেনসেশন’। এর জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক সময় এতটাই বেড়ে গেছে যে, তাজমহলকে ছাড়িয়ে সবথেকে জনপ্রিয় পর্যটন অভিজ্ঞতা হিসেবে প্রচারও পেয়েছে এটি। শুধুমাত্র এইসব বস্তি এলাকায় ঘোরাবার জন্য তৈরি হয়েছে কিছু ট্রাভেল এজেন্সি। তাদের রোজগারও দেখার মতো।
বস্তি নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের এই আগ্রহ নতুন কিছু নয়। এর আগে ব্রাজিলের মতো লাতিন আমেরিকার কিছু দেশে এবং আফ্রিকার কিছু দেশে এই ধরনের পর্যটন শুরু হয়েছিল। মূলত তৃতীয় বিশ্বের গরিব দেশগুলিতে এর প্রচলন। তারই অংশ হিসেবে ভারতেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই ‘দরিদ্র পর্যটন’। প্রশ্ন উঠতে পারে, দারিদ্র কি কখনও পর্যটনের বিষয় হিসেবে উঠে আসতে পারে? একটা দেশের বড় অংশের মানুষ যেখানে অভাবের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করছে, কষ্ট করে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতেও বেঁচে থাকছে— শুধু সেটা দেখার জন্য প্রথম বিশ্বের পর্যটকরা দলে দলে ভিড় করছেন? অবশ্য পর্যটকরা বলছেন সমাজের বাস্তবতা বোঝার জন্যই তাঁরা আসেন এখানে। অনেক সময় সমাজসেবামূলক কাজেও অংশ নেন তাঁরা। এই অবস্থা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার কাজও করেন কেউ কেউ। জীবনের এই স্রোতকে কখনই উপেক্ষা করতে চান না তাঁরা। তাই, ধারাভি বস্তির মতো আরও দরিদ্র কবলিত এলাকা পর্যটন মানচিত্রে দ্রুত উঠে আসছে।