প্রকাশিত হল ২০২০-র বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কিত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উপগ্রহ সংগৃহীত তথ্য। আর তাতেই চমকে উঠছেন বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘমেয়াদি তাপমাত্রার গড়ের তুলনায় ২০২০ সালের উষ্ণতা ছিল ১.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। পাশাপাশি ২০২০-র দৌলতে ২০১০-২০ দশকটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে উষ্ণতম দশক হিসাবে তৈরি করল রেকর্ড। যা আবহাওয়া পরিবর্তনের ব্যাপারে দিচ্ছে অশনি সংকেত।
গত ডিসেম্বরে, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২০ পৃথিবীর উষ্ণতম ৩টি বছরের মধ্যে একটি হবে। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গেল পৃথিবীর সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর হিসাবে শীর্ষেই রয়েছে ২০২০। ২০১৬-র থেকে সামান্য পিছিয়ে থাকলেও একই স্থানে রাখা হয়েছে দুই উষ্ণতম বছরকে। তবে গড় উষ্ণতার থেকেই বিজ্ঞানীরা বেশি চিন্তিত আর্কটিক এবং সাইবেরিয়া অঞ্চলের তাপীয় প্রবাহ নিয়ে। যা সামগ্রিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মূল কারণ।
স্যাটেলাইট প্রেরিত তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫০-১৯০০ সাল অর্থাৎ প্রাক-শিল্প যুগের গড়ের তাপমাত্রার তুলনায় সাম্প্রতিক তাপমাত্রা বেড়েছে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পৃথিবীর কিছু কিছু অংশে এই তাপমাত্রা বেড়েছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
তাপমাত্রার বৃদ্ধির পাশাপাশি কার্বন নির্গমনও আকাশ ছুঁয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। কোপারনিকাস থেকে প্রাপ্ত তথ্য দেখাচ্ছে শিল্প বিপ্লবের আগের তুলনায় কার্বন ডাই অক্সাইডের গড় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ শতাংশ। তবে আগামীতে কার্বনের পরিমাণ আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নেবে বলেই সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা। গত ২০০ বছরে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যে মাত্রা, তা আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পৌঁছাতে চলেছে ৫০ শতাংশে।
তবে চলতি এই উষ্ণায়ন থেকে খানিকটা হলেও রেহাই পাবে ২০২১। লা নিনা’র প্রভাবে কিছুটা হলেও কমবে তাপমাত্রা। যা সাহায্য করবে ট্রপিক্যাল অরণ্যের বৃদ্ধিতে। ফলে বায়ুর কার্বন শোষণও বাড়বে আগের থেকে বেশ খানিকটা। কিন্তু এর পরেও তা জলবায়ু পরিবর্তন রোখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সাময়িক স্বস্তি দিলেও আবহাওয়া পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলবে মানব সভ্যতায়...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
১২০ বছরের ইতিহাসে অষ্টম উষ্ণতম বছর ২০২০, জানাচ্ছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ