ইয়াসের ক্ষত পুরোপুরি মিলিয়ে যাওয়ার আগেই বঙ্গোপসাগরের বুকে আবারও তৈরি হয়েছে এক ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)। অবশ্য সেপ্টেম্বর-নভেম্বর মাসের মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় সাধারণত। এবছর দেরি হওয়ায় বেশ খানিকটা চিন্তাতেই ছিলেন আবহাওয়াবিদরা। শেষ পর্যন্ত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহেই আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছিল, গভীর নিম্নচাপ অক্ষের সৃষ্টি হয়েছে সমুদ্রে। আর ডিসেম্বরের শুরুতেই তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। আশঙ্কা অনুযায়ী হাজির হতে চলেছে জাওয়াদ (Jawad)। রাত পোহালেই ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়বে জাওয়াদ, এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
বঙ্গোপসাগরের প্রতিটা ঘূর্ণিঝড়ের নামের একটি করে অর্থ থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার কোনো একটি দেশের পক্ষ থেকে নাম দেওয়া হয়। এবারের ঝড়টির নাম রেখেছে আরব আমিরশাহী। জাওয়াদ নামের অর্থ মহান বা সদয় ব্যক্তি। ২০২০ সালেই এই নামটির প্রস্তাব দেয় আরব আমিরশাহী। সেই বছর একসঙ্গে ১৩টি নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এখনও অবধি বঙ্গোপসাগরের মোট ১৬৯টি ঝড়ের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। জাওয়াদের পর যে ঝড়টি আসবে, তার নাম রাখা হবে আসানি। এই নামটি রেখেছে শ্রীলঙ্কা।
৩০ নভেম্বর নিম্নচাপ অক্ষ থেকে ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সংকেত পাওয়া গিয়েছিল। আর গতকাল, অর্থাৎ ২ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিপুর্ণ ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে জাওয়াদ। আগামীকাল সকালেই ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে জাওয়াদ। প্রায় ৮০-১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে আছড়ে পড়বে জাওয়াদ, এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ইতিমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে ওড়িশার বিস্তীর্ণ এলাকায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরও। মৎসজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। উপকূল থেকে পর্যটকদের সরিয়ে আনার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে।
জাওয়াদের কারণে পশ্চিমবঙ্গেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার বিকাল থেকেই শুরু হতে পারে বৃষ্টি। এমনকি রবিবার সারাদিন ধরে অসম, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতেও বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। গত মার্চে ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে উপকূল অঞ্চলে। জাওয়াদ কি উপকূলবাসী মানুষদের প্রতি ‘সদয়’ হবে? নামের সঙ্গে বাস্তবের কতটা মিল থাকে, আপাতত সেটাই দেখার।
Powered by Froala Editor