দেখতে দেখতে প্রায় ২ বছর কেটে গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের ক্ষত এখনও ভুলতে পারেনি সুন্দরবন। আর এরই মধ্যে আমফান (Cyclone Amphan) সম্পর্কিত আরও এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান প্রকাশ করল জাতিপুঞ্জের ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ। চলতি সপ্তাহেই প্রকাশিত হয়েছে আইপিসিসি-র (IPCC) ২০২০ সালের রিপোর্টের দ্বিতীয় কিস্তি। আর তাতেই উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন আমফানের কারণে। সংখ্যাটা প্রায় ৫০ লক্ষের কাছাকাছি।
২০২০ সালের মে মাসে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম শ্রেণির ঘূর্ণাবর্ত থেকে পঞ্চম শ্রেণির ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছিল আমফান। ১৯৯৯ সালের পর এই প্রথম বঙ্গোপসাগরের উত্তরে সুপার সাইক্লোন তৈরি হয়। আর বিগত ১০০ বছরে বঙ্গোপসাগরে যত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী আমফান। এমন ঘূর্ণিঝড় কেন গড়ে উঠল, তা নিয়েও নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। আইপিসিসি-র মতে, আমফান সৃষ্টির পিছনে অন্যতম বড়ো ভূমিকা পালন করেছে কোভিড অতিমারীর কারণে দেশজুড়ে লকডাউন।
আমফানের সতর্কতা হিসাবেই পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার উপকূল অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রায় ৮ লক্ষ মানুষকে। কিন্তু তাতেও সমস্যা এড়ানো যায়নি। ঘূর্ণিঝড়ের পর নতুন করে শুরু হয় অভিবাসী মিছিল। ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে বহু মানুষের বাড়ি। পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা মিলিয়ে এই ঘটনায় বাসস্থান হারিয়েছেন প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষ। আর বাংলাদেশ, মায়ানমারের পরিসংখ্যান যোগ করলে সংখ্যাটা ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।
আইপিসিসি-র মতে, লকডাউনের কারণে সমুদ্রের আশেপাশের অঞ্চলে দূষণের পরিমাণ কমেছিল। আর তার ফলে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ হ্রাস পাওয়াতেই সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাই এমন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম হয়েছিল। যদিও এই যুক্তি মানতে রাজি নন আবহাওয়াবিদদের অনেকেই। তাঁদের মতে, সুন্দরবন অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ কমে আসাই এই দুর্যোগের প্রধান কারণ। আর আগামীদিনে সুন্দরবনকে বাঁচাতে না পারলে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন
আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্রে মিশছে বিদেশি প্রজাতি, বাসা বাঁধছে কাঁকড়া এবং ঝিনুকও
একদিকে সরকারিভাবে বারবার দাবি করা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে এখনও পর্যাপ্ত তথ্য নেই সরকারের হাতে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক স্তরে বারবার উঠে আসছে ভারতের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। এই অবস্থায় আর কত মানুষ গৃহহারা হবেন, জানেন না কেউই।
আরও পড়ুন
জনবহুল অঞ্চলে প্রকোপ বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের, চাঞ্চল্যকর তথ্য সাম্প্রতিক গবেষণায়
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কয়েক ঘণ্টায় আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, কী তার পরিচয়?