মাত্র ৬-৭ মাস আগের কথা। আজও সেদিনের কথা মনে করলে আতঙ্কে চোখ বন্ধ হয়ে আসে সুন্দরবনের মানুষের। সতর্কবার্তা অবশ্য অনেক আগে থেকেই ছিল। বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নিরাপদ দূরত্বে। কিন্তু তারপরেও আমফানের বিধ্বংসী প্রভাব এড়ানো যায়নি। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিলেন এক রাতের মধ্যে। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে তারই ভয়ঙ্কর প্রভাবের ইতিবৃত্ত।
বুধবার এক বছরের নানা প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার খতিয়ান প্রকাশ করল ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন বা ডব্লিউএমও। আর সেই রিপোর্টে বিশ্বের প্রথম সারির প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার মধ্যে জায়গা করে নিল ঘূর্ণিঝড় আমফান। পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি সতর্কতা সত্ত্বেও ভারত এবং বাংলাদেশ মিলিয়ে ১২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে ২৪ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যাটা ২৫ লক্ষ। আর সব মিলিয়ে ২৮ লক্ষ বাড়ি একেবারে ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। আজও নূন্যতম মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই বহু মানুষের।
আর্থিক হিসাব বলছে, আমফানের ফলে ক্ষতি হয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলারের। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এরকম বড়ো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। তবে বঙ্গোপসাগরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পিছনে উষ্ণায়নকেই দায়ী করছেন ডব্লিউএমও-র আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে ভারতের উষ্ণতা বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছে বলে মত তাঁদের। আর শিল্পায়নের উপর রাশ টানতে না পারলে ভারতের জন্য আরও বড়ো বিপদ অপেক্ষা করছে। আদৌ কি এরপরেও সচেতন হবেন মানুষ?
Powered by Froala Editor