পাটের ব্যাগ, চটি, কাপড়— এসব তো শুনেছেন। কিন্তু পাট দিয়ে তৈরি বাইসাইকেলের কথা শুনেছেন এর আগে? নিশ্চয়ই নয়। কিন্তু বাংলাদেশের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ আবু নোমান সৈকত এই অসম্ভব কাজটিকেই সত্যি করে দেখিয়েছেন। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। পাটের তৈরি বাইসাইকেল সত্যিই বহাল তবিয়তে রাস্তায় চলছে। কিন্তু পাট দিয়ে বাইসাইকেল তৈরি করার কথা কখন মাথায় এল? ঢাকা পলিটেকনিকের প্রাক্তন ছাত্র সৈকত যখন সাইকেল বানানোর বিষয়ে আগ্রহী হন, তখন থেকেই হালকা বস্তু দিয়ে সাইকেলের মূল কাঠামো তৈরির কথা চিন্তা করেন। কার্বন ফাইবারের কথা মাথায় ছিল; কিন্তু তার অত্যাধিক দাম সেই কাজে অন্তরায় হচ্ছিল। শেষে সৈকতের নজরে আসে পাট। শুরু হয় পড়াশোনা। কীরকম আঁশ ব্যবহার করা হবে, ঘনত্ব কত হবে, সমস্ত বিষয় খুঁটিনাটি জেনে ২০১৫ সালে থেকে কাজে নামেন তিনি। প্রথমে পাট আর রেজিন ব্যবহার করে পুরো ব্যাপারটাকে শক্ত পাইপের আকার দেন। তারপর প্রয়োজনমতো সেই পাইপ কেটে তৈরি হয় সাইকেল। সব মিলিয়ে উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৫-২০ হাজার। তবে রেজিন ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে গেলেও পাটের কাঠামোটি পচবে না। অ্যালুমিনিয়াম বা স্টিলের কাঠামো তৈরিতে যে পরিমাণ জল লাগে, তার থেকে অনেক কম জল ব্যবহৃত হয় এইখানে। ফলে পরিবেশের দিক থেকেও একটা সাশ্রয় হচ্ছে পাটের সাইকেলে। তবে সৈকত এখনই বাজারে আনছেন না এই সাইকেল। আরও বেশ কিছু পরীক্ষার পর এটি বাজারে আসবে।