সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট উঁচুতে গড়ে উঠেছে নতুন বাগান। অন্তত ৫০টি প্রজাতির গাছের বাস সেখানে। অথচ এই গাছেদের কারোরই ফুল বা ফল তৈরি হয় না। নতুন গাছের জন্মের জন্য বীজও হয় না। হ্যাঁ, এমনই এক বাগানের উদ্বোধন হল দেরাদুনের দেওবন অরণ্যে। পরিবেশকর্মী অরুপ নুটিয়াল রবিবার উদ্বোধন করলেন দেশের প্রথম ক্রিপ্টোগ্যামিক বাগানের।
দেরাদুনের অরণ্য বহু প্রজাতির আবাসস্থল। অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেক প্রজাতিই হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে মস, ফার্ন এবং লিচেনের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সংরক্ষণ প্রকল্পের বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই নতুন এই বাগান তৈরি করল বনবিভাগ।
ভারতের বুকে এই প্রথম শুধুমাত্র ক্রিপ্টোগ্যামিক উদ্ভিদদের জন্য কোনো বাগান তৈরি হল। ক্রিপ্টোগ্যামিক উদ্ভিদ হল সেইসমস্ত গাছ, যাদের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বীজ উৎপন্ন হয় না। অর্থাৎ ফুল বা ফলের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। নিষেকের প্রক্রিয়াকে গোপন করে রাখা হয় বলেই এর নাম ক্রিপ্টোগ্যামিক। এর মধ্যে শৈবাল গোত্রের উদ্ভিদ পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন জীবগোষ্ঠী। আবার মস, ফার্ন বা লিচেনের এক একটি প্রজাতির বয়সও কয়েক লক্ষ বছর। এই সমস্ত প্রজাতি হারিয়ে গেলে যে জীবজগতের সমূহ ক্ষতি হবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
দেরাদুন বনবিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, দেওবনের জঙ্গলে ওকে ও দেবদারু গাছের ঘনত্ব যথেষ্ট বেশি। আর এইসমস্ত গাছকে আশ্রয় করে ক্রিপ্টোগ্যামিক উদ্ভিদরা সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে এই বাগান তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যোগ সফল হলে আগামীদিনে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও একইরকম উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বনবিভাগ।
Powered by Froala Editor