মাথার ওপর ক্রমশ তাপ বাড়াচ্ছে সূর্য। যেদিকে দুচোখ যায়, ধু ধু বালি; মাঝেমধ্যে মাথা তুলে আছে পিরামিড। মিশরের এমন ছবির কথা সবাই জানি। জানতেন গবেষকরাও। কিন্তু এটা জানতেন না, সেই গরম বালির নিচেই তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে আছে এক মিশরীয় আশ্চর্য! বালির পরত একটু একটু করে সরাতেই দেখা মিলল খুলি। না, মানুষের নয়। কুমিরের!
সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় মিশরের মরুভূমির বালির ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে কুমিরের মমি। অধ্যাপক আলেকজান্দ্রো জিমেনেজ-সেরানো এবং তাঁর দল আসওয়ানের কাছেই একটি অঞ্চলে নিজের কাজ চালাচ্ছিলেন। কুবেত এল-হাওয়ার এই স্থানটি এমনিই প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অংশ ছিল। আর মিশর নিয়ে ঐতিহাসিক, গবেষকদের তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও উৎসাহ কম নয়। কত রকমের রহস্য, রোমাঞ্চ ও ইতিহাস জড়িয়ে আছে এখানকার সঙ্গে। সেখানেই কাজ করছিলেন প্রাচীন কোনো মমির সন্ধানে। কারণ যে স্থানে ছিলেন তাঁরা, সেটা বিশেষ ব্যক্তিদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হত। কাজেই কোনো অনাবিষ্কৃত মমি থাকলেও থাকতে পারে।
বালির ভেতর চলছিল অনুসন্ধান। হঠাৎই সেখানে কিছু একটা দেখতে পেলেন আলেকজান্দ্রোর এক সহকারী। সময় আরও যাওয়ার পর সবাই রীতিমতো চমকে গেল। কোনো রাজার মমি নয়; একটা কুমিরের খুলি! বিশাল বড়ো চোয়াল, সঙ্গে তীক্ষ্ণ ভয়াল দাঁত। একটু পরেই দেখা গেল, একটা নয়, পাশেই রয়েছে আরও একটি কুমিরের কঙ্কাল। এভাবে এই স্থানে কুমিরের কঙ্কাল পাওয়াটা একটু আশ্চর্যেরই। তবে গবেষকদের মত, এদের সম্ভবত মমিই করা হয়েছিল। কারণ কুমিরের হাড়ে কালো কালো অংশ ছিল, যা চামড়া এবং মাংসেরই উপস্থিতি জানান দেয়। বিশেষ করে, এদেরকে যেভাবে রাখা হয়েছে সেটা স্বাভাবিক মৃত্যু হলে হত না। নিশ্চয়ই মমিই দেওয়া হয়েছিল। তবে দুর্ভাগ্যবশত, কুমিরের মমি দুটির মধ্যে একটিই সংরক্ষণ করার মতো অবস্থায় আছে। তবে সেটাও পরবর্তী গবেষণার জন্য নিঃসন্দেহে ভালো কাজ হবে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কফিন আছে, কিন্তু মানুষ কই? ভেতরের মমি দেখে তাজ্জব গবেষকরা