হাতরাস ধর্ষণ কাণ্ডের ধর্ষিতার মৃত্যুর ঘটনা সমস্ত দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তার থেকেও বেশি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে মৃত্যুর পরবর্তী ঘটনা। মৃতার পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়েই রাতারাতি শবদেহ দাহ করে ফেলে পুলিশ। দলিত যুবতীর সঙ্গে প্রশাসনের এমন ব্যবহার সত্যিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সমাজের বর্তমান চেহারা। আর তফশিলি জাতি ও উপজাতির উপর হিংসার ঘটনাও ক্রমশ বেড়ে চলেছে বলেই জানিয়েছে ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এনসিআরবি-র ২০১৯ সালের রিপোর্ট। আর সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ২০১৮ সালের তুলনায় গত বছরে এই ধরনের হিংসার সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। তফশিলি জাতির উপর হিংসার ঘটনা বেড়েছে ৭.৩ শতাংশ। এবং তফশিলি উপজাতির উপর হিংসার সংখ্যা বেড়েছে ২৬.৫ শতাংশ। এভাবে হিংসার বাড়বাড়ন্ত স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্যভিত্তিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে তফশিলি জাতির উপর হিংসার ঘটনায় প্রথম স্থানে আছে উত্তরপ্রদেশ। সারা দেশের এমন ঘটনার এক চতুর্থাংশের বেশিই ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। তফশিলি জাতির মহিলাদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে রাজস্থান। ২০১৯ সালে সে রাজ্যে ৫৫৪ জন তফশিলি জাতির মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশও খুব পিছিয়ে নেই। এই দুই রাজ্যে এমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ৫৩৭ এবং ৫১০টি। তফশিলি উপজাতির মহিলাদের ধর্ষণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। সেখানে সারা বছরে ১৯২২ জন উপজাতি মহিলা ধর্ষিতা হয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে রাজস্থান এবং ওড়িশা।
তবে ক্রমশ এই ধরনের হিংসার ঘটনা বাড়তে থাকায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। এর পিছনে কোনো ঘটনা অনুঘটকের কাজ করছে কিনা, সেকথাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন এনসিআরবি-র আধিকারিকরা। রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা থেকে সাম্প্রতিক হাথরাস ধর্ষণকাণ্ড সমাজের এই ভয়ঙ্কর চেহারাই প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। আর সেই ঘটনা এবার সামনে এল পরিসংখ্যানের চেহারায়। প্রশাসন এ বিষয়ে কতটা সফল হবে আমরা জানি না। কিন্তু হিংসা বিধ্বস্ত সমাজকে বদলাতে এগিয়ে আসতে হবে মানুষকেই।
আরও পড়ুন
এবার বলরামপুর, গণধর্ষণের পর নৃশংস হত্যা ২২ বছরের দলিত ছাত্রীকে
Powered by Froala Editor