জুভেন্তাস হোক বা বার্সেলোনা, ‘বোঝা’ মেসি-রোনাল্ডোর মতো তারকারাই

একদিকে পোর্তোর বিরুদ্ধে ২-১ এর ব্যবধানে পিছিয়ে জুভেন্তাস। অন্যদিকে পিএসজির কাছে প্রথম লেগে ৪-১ গোলের বড়ো হার বার্সেলোনার। চলতি সপ্তাহে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাউন্ড অফ ১৬-এ ফেরার লড়াইয়ে নামছে ইউরোপের দুই ফুটবল জায়েন্ট। ভরসা সেই লিও মেসি কিংবা সিআর৭-ই। তা সত্ত্বেও তাঁরাই এই দুই ক্লাবের সাম্প্রতিক ‘ধস’-এর বড়ো কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই বড়ো ঋণে ডুবে রয়েছে ইউরোপের এই দুই প্রথম সারির ক্লাব। আর তার কারণই হল এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা দুই ফুটবল তারকা। বার্সেলোনায় এই মুহূর্তে লিও মেসির পারিশ্রমিক ২৮.৫ মিলিয়ন পাউন্ড। বোনাস তারও চারগুণ। অর্থাৎ, শুধু মেসির পিছনেই ক্লাবের খরচ হয়ে চলেছে ১.১ বিলিয়ন পাউন্ড। রোনাল্ডোর ক্ষেত্রেও হিসেবটা একই রকম। ২৮ মিলিয়ন পাউন্ডের ওপরে বাড়তি বোনাস। যা জুভেন্তাসের স্কোয়াডে সর্বোচ্চ বেতনভোগী পরবর্তী চার খেলোয়াড়ের পারিশ্রমিকের সমান।

এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ একদিকে যেমন ঋণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ক্লাবগুলিকে, তেমনই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নতুন তারকাদের জায়গা করে দেওয়ার পথ। যে কারণে গত বছর থেকে একের পর এক ম্যাচে মাঝমাঠ ধসে যাওয়ার পরও বিকল্পের সন্ধান খুঁজতে ব্যর্থ বার্সেলোনা। ৩৫০ মিলিয়নের ঋণ সামলে জুভেন্তাসের পক্ষেও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কোয়াডে নতুন ফুটবলার সংযোজন। 

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, বছর কয়েক আগের সেই ধারাবাহিক ফর্মে কি রয়েছে মেসি-রোনাল্ডো? ম্যাচের ফলাফল কিংবা দর্শকদের উত্তেজনা যাই বলুক না কেন, পরিসংখ্যান কিন্তু শোনাচ্ছে উল্টো কথা। বছর দুয়েক আগেও দুই তারকার প্রতি ম্যাচে ট্যাকল ও ইন্টারসেপশনের সংখ্যা ছিল ২-এর বেশি। বর্তমানে রোনাল্ডো ও মেসির ক্ষেত্রে তা নেমে এসেছে যথাক্রমে ০.৪ ও ০.৭-এ। জুভেন্তাস কোচ আন্দ্রে পিরলোর ট্যাকটিক্সের সঙ্গে যা পুরোপুরি পরিপন্থী। বয়স বাড়ার জন্যই কি তবে ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়ছেন এই দুই তারকা? আবেগ সরিয়ে রেখে বললে, কারণটা তাই-ই।

আরও পড়ুন
তারকাদের দুর্নাম রটানো, তহবিল তছরুপ; গ্রেপ্তার বার্সেলোনার সাবেক প্রেসিডেন্ট বার্তমেউ

তবে দল থেকে এমন ‘অ্যাসেট’ সরিয়ে রাখাও বেশ চ্যালেঞ্জিং দুই ফুটবল ক্লাবের কাছে। বিশেষত বার্সেলোনার পক্ষে কার্যত অসম্ভব ২১ বছরের সম্পর্কে ইতি টানা। শুধু ক্লাবের সেরা খেলোয়াড়ই ছিলেন না মেসি, হয়ে উঠেছিলেন বার্সা-পরিবারের সদস্য। অন্যদিকে রোনাল্ডোই এখন জুভেন্তাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। কাজেই ধর্ম-সংকটে দুই ক্লাবই।

সত্তর দশকে ঠিক একইরকম পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন লিভারপুলের ম্যানেজার বিলি শ্যাংকো। কিংবদন্তি তারকা সেন্ট জনকে শুধু চুক্তিমুক্ত করার প্রস্তাব দিতেই অপেক্ষা করেছিলেন ৩ বছর। রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল ‘ঘরের ছেলে’ ইকের ক্যাসিয়াসকেও। তাছাড়াও নোবি পিটার স্টাইলেস, ববি মুর সকলের ক্ষেত্রেই ঘটেছিল একই ঘটনা। এখন দেখার, বার্সা-জুভেও কি হাঁটবে সেই পথে নাকি অন্য কোনো সমাধান খুঁজে বার করবে এই সমস্যার…

আরও পড়ুন
কুয়াশায় ঢাকা মাঠ, ছেড়ে গেছেন সতীর্থরাও; গোললাইন আগলে একা দাঁড়িয়ে স্যাম বারট্রাম

Powered by Froala Editor