Powered by Froala Editor
কোভিশিল্ড বনাম কোভ্যাকসিন : সরকার অনুমোদিত দুই ভ্যাকসিনের পার্থক্য কী?
১/৭
মাঝে আর মাত্র ২টো দিন। আগামী শনিবার থেকেই ভারতে শুরু হতে চলেছে গণটিকাকরণ। তবে একটি নয়, মারণ ভাইরাসের মোকাবিলায় ভারত বেছে নিয়েছে দু-দুটি ভ্যাকসিনকে। যার মধ্যে প্রথমটি হল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিশিল্ড। অন্যটি আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন। তবে গণটিকাকরণের প্রাক্কালেই দেশের ঘনীভূত হয়ে উঠেছে বিতর্ক। কিন্তু কেন? এই দুই ভ্যাকসিনের মধ্যে তফাৎটাই বা কোথায়? জেনে নেওয়া যাক সেই তথ্যই...
২/৭
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটির মধ্যেই রয়েছে জীবন্ত ভাইরাস বাহক। তবে তা ঘাতক করোনাভাইরাস নয়। শিম্পাঞ্জিকে সংক্রমিত করতে পারে এমনই একটি এডিনো ভাইরাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জিন ডোপিংয়ে বানানো হয়েছিল এই ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর মানব শরীরের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা চিহ্নিত করবে কেবলমাত্র করোনাভাইরাসের জিনটিকে। পারতপক্ষে পরবর্তীকালে তাই সুরক্ষা যোগাবে মহামারীর হাত থেকে। অন্যদিকে এডিনোভাইরাসটিও বংশবৃদ্ধি করতে পারবে না আমাদের দেহে।
৩/৭
অন্যদিকে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন মূলত একটি মৃত সার্স-কোভ-২ করোনাভাইরাস। মৃত ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন এবং জিন সরাসরি দেহে উপস্থিত থাকার কারণে তাকে চিহ্নিত করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠবে দেহে। তবে ভাইরাসটি মৃত থাকার কারণে বংশবিস্তারের সম্ভাবনা নেই কোনো।
৪/৭
তবে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির অন্তর্গত কোভ্যাকসিন নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে জল্পনা। উঠে আসছে একাধিক বিতর্ক। পারতপক্ষে আইসিএমআরের তৈরি এই ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ট্রায়াল শেষ হয়নি এখনও। গণটিকাকরণই অনেকটা তৃতীয় ও শেষ ট্রায়ালের কাজ করবে এক্ষেত্রে। ফলে কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন। পাশাপাশি কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে পছন্দ মতো ভ্যাকসিন বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন না নাগরিকরা। কাজেই সমালোচনার সম্মুখীন কেন্দ্র সরকার।
৫/৭
তবে খরচের দিক থেকে দেখতে গেলে, দুটি ভ্যাকসিনের দামই কাছাকাছি থাকছে প্রথম দফায়। প্রথম ১.১ কোটি ডোজের কোভিশিল্ডের জন্য সেরাম ইনস্টিটিউট বরাদ্দ করেছে ২০০ টাকা প্রতি ডোজ। অন্যদিকে প্রতি ডোজের জন্য কোভ্যাকসিনের দাম পড়বে গড়ে ২০৬ টাকা। তবে পরে বাজারে কোভিশিল্ড কিনতে গেলে ডোজ পিছু ১০০০ টাকা গুনতে হবে গ্রাহকদের, জানিয়ে রেখেছে সেরাম। অর্থাৎ পূর্ণ ভ্যাকসিনেশনের জন্য লাগবে মাথা পিছু ২০০০ টাকা।
৬/৭
রোগ প্রতিরোধে ৭০ শতাংশ কার্যকরী হবে কোভিশিল্ড, এমনটাই জানিয়েছে সেরাম। কিছুক্ষেত্রে থাকবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। তবে তা যে কোনো রোগের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেই দেখা যায় বলে জানাচ্ছে প্রস্তুতকারক সংস্থা। তবে কোভ্যাকসিনের ব্যাপারে সফলতার হার এখনও নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। দুই ভ্যাকসিনই ১০০ শতাংশ প্রতিরোধ সক্ষম না হওয়ায়, ভ্যাকসিনেশনের পরও মাস্ক এবং প্রথাগত নিরাপত্তাবিধি মেনেই চলতে হবে সকলকে। অন্যথা রয়েছে বিপদের সম্ভাবনা। এমনটাই জানাচ্ছেন দেশের চিকিৎসকরা
৭/৭
তবে অন্যান্য রোগের টিকার থেকে করোনাভাইরাসের টিকা বেশ খানিকটা ভিন্ন প্রকৃতির। করোনাভাইরাসের প্রোটিনকে খুব বেশিদিন চিহ্নিত করে রাখতে পারে না আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে ৯ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যেই আবার নতুন করে ভ্যাকসিন নিতে হবে সকলকেই। নাহলে এড়ানো যাবে না সংক্রমণের সম্ভাবনা। পাশাপাশি যারা ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদেরকেও একই ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছেন দেশের চিকিৎসাবিদরা।