টেমস নদীর ধার দিয়ে পাশাপাশি সব বাড়ির সাদা দেওয়াল। ঠিক যেন একটা সাদা ক্যানভাস। আর তার উপরেই ক্রমশ ফুটে উঠছে অসংখ্য ‘রেড হার্ট’। ভালোবাসার প্রতীক। করোনা অতিমারীর বছর পেরিয়ে এসে এভাবেই ইতিহাসকে ধরে রাখছে লন্ডন শহর। প্রতিটি হার্ট আসলে করোনায় মৃত একেকজন মানুষের প্রতীক। আর মানুষগুলোর মতোই তাদের চিহ্নগুলোও আলাদা আলাদা। কারোর সঙ্গে কারোর হুবহু মিল নেই। প্রতিটা চিহ্নই হাতে আঁকা।
ইংল্যান্ডে করোনার কারণে লকডাউন ঘোষণার এক বছর পূর্তি হয়েছে সম্প্রতি। আর এই এক বছরে মানুষের হারানোর তালিকাটা নেহাৎ কম নয়। করোনার কারণে লন্ডন শহরেই দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর তাঁদের প্রত্যেকের স্মৃতিতেই একটি করে হার্ট আঁকা হবে এই ‘কোভিড মেমোরিয়াল’ দেয়ালে। আর আঁকবেন মৃতদের আত্মীয়রাই। প্রতিটা তুলির টানের সঙ্গে মিশে থাকবে এক ঝাঁক স্মৃতি।
তুলি নামিয়ে সরে আসার সময় কারোর চোখে জল। কেউ বহুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন দেওয়ালের সামনে। ঠিক যেন এক গণসমাধির দৃশ্য। তবে এই সমাধিগাত্রের মধ্যে মিশে আছে শুধুই ভালোবাসা। সমাজকর্মী জো গুডম্যানের নেতৃত্বে এভাবেই সেজে উঠছে লন্ডন। দৈর্ঘ্যে ইতিমধ্যে কয়েক মাইল বিস্তার লাভ করেছে। ১.৫ লক্ষ হার্ট আঁকা হলে সম্পূর্ণ গ্রাফিটিটি ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ থেকে পার্লামেন্ট হাউস পর্যন্ত পৌঁছে যাবে বলে মনে করছেন মিস গুডম্যান। আর তাহলে এটি লন্ডনের অন্যতম বৃহৎ গ্রাফিটিগুলির মধ্যে জায়গা করে নেবে অনায়াসেই।
প্রতিষেধক আবিষ্কারের পরেও লন্ডন শহর এখন তৃতীয় তরঙ্গের সংক্রমণের মুখোমুখি। এই অবস্থায় বিগত এক বছরের স্মৃতি আবারও ফিরে ফিরে আসছে। সেই ভয়াবহতা হয়তো আর দেখা যাবে না। কিন্তু স্বজন হারানো মানুষদের জীবনে তা স্থায়ী দাগ হয়ে থেকে যাবে।
আরও পড়ুন
শীতের আমেজ নিয়েই অবশেষে খুলছে কলকাতা জাদুঘর ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নামবদলের ফাঁসে কলকাতা, বন্দরের পরে 'টার্গেট' ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল?