সামনে রয়েছে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র। তার চারপাশের বিস্তৃত জায়গা কি আপনি কিনতে চাইবেন নিজের জন্য? নিশ্চয়ই না। কিন্তু এই কাজটাই করেছেন দিল্লির এক প্রাক্তন সরকারি কর্মী। তবে বাড়ি ঘর বানানোর জন্য না। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী রাজস্থানের রণথম্বোর টাইগার রিজার্ভের চারিধারে জমি কিনেছেন শুধু ওই বাঘগুলোর জন্যই। সেখানেই তিলে তিলে তৈরি করেছেন জঙ্গল, যাতে ওই পশুরা স্বাধীনভাবে থাকতে পারে।
সব কিছুর শুরু ১৯৯৮ সালে। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে কর্মরত আদিত্য সিং ছেড়ে দিলেন সম্মানের, মোটা মাইনের চাকরি। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী পুনম সিং চলে গেলেন রাজস্থান। সেখানেই রণথম্বোরে অবস্থিত ভারতের অন্যতম বড় ও বিখ্যাত ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র। মুগ্ধ হলেন ওই জায়গার প্রতি। তখনই ঠিক করলেন, এই পার্কের চারিদিকের জমি কিনে নেবেন।
আরও পড়ুন
দৃষ্টি হারিয়েছেন ১৯ বছরেই, আজ ভারতের প্রথম ব্লাইন্ড প্যারা-গ্লাইডার দিব্যাংশু
যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। খুব যে সহজ ছিল তা নয়। মোট ৪০ একরের কাছাকাছি জমি তাঁরা কেনেন। আজকের দিনে এই পরিমাণ জমির ডাম কয়েক লাখ তো ছাড়াবেই। এত টাকা দিয়ে কিনেছেন, নিশ্চয়ই ঘাস টাস পরিষ্কার করে কিছু বানাবেন। কিন্তু না! কিচ্ছু করলেন না সিং দম্পতি। ৪০ একরের বিস্তৃত জমিকে স্রেফ ছেড়ে দিলেন নিজের মতো। বরং নজর দিলেন যাতে এখানে গাছপালা বাড়ে। যদি সেটা হয়, তাহলে এই সংরক্ষণ কেন্দ্রের বাঘ ও অন্যান্য প্রাণীদের সুবিধাই হবে।
২০ বছরের পরিশ্রম! তিল তিল করে তৈরি হয়েছে আদিত্য আর পুনমের সাধের বন। আজ সেটা আর ঘাসের জমি নেই; কোনো বড় নির্মাণও নেই। সেখানে শুধুই গাছ আর গাছ। তাঁদের থেকে উৎসাহিত হয়ে অনেকে এই একই কাজ করছেন অন্যান্য জায়গায়। সিং দম্পতিও থেমে নেই। টাকা বড় ব্যাপার নয়, যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের চারিপাশের পরিবেশকে ভাল রাখলেই সেটা কাম্য। ছোট ছোট পদক্ষেপেই তো বড় কাজ হয়!